আহমদ হাসান ইমরান: হাওড়ায় দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বয়সের বিচারে মাত্র কয়েক বছর। কিন্তু এর মধ্যেই দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি সারা পশ্চিমবাংলায় সাড়া ফেলেছে। উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রীরাই এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
কেন এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়তে এগিয়ে এলেন, এই প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিষ্ঠান ও নারী শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান পুরুষ জনাব শেখ হায়দার আলি বলেন, আমরা কয়েকজন লক্ষ্য করলাম যে, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়ার পর বেশিরভাগ মুসলিম মেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। কিন্তু যদি বাংলা জুড়ে এই অসংখ্য মেয়ের পরবর্তী পড়াশোনার ব্যবস্থা করা যায়, যদি তাদের তালিম বা শিক্ষার সঙ্গে তারবিয়েত-র ব্যবস্থা করা হয় তাহলে সমাজে একটা বড় পরিবর্তন আসতে পারে। আর তা দ্বীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রে আমাদের লাভবান করবে।
হায়দার সাহের আরও বলেন, মনে রাখতে হবে মেয়েরাই হচ্ছে আসলে দ্বীন ও দুনিয়া উভয় দিক থেকে সমাজ গড়ার কারিগর। একজন মেয়ে শিক্ষিত হলে পুরো পরিবারে শিক্ষা ও সংস্কৃতির আবহ গড়ে ওঠে। তাঁরা দ্বীনের দিকেও পরিবারের বাকি পুরুষ সদস্যদের এগিয়ে দিতে পারেন। তাই আমরা ২০১৬ সালে মাত্র ২৪ জন অনাবাসিক মেয়েদের নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটির সূচনা করি। আজকে পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলায় ৪০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী দ্বীনিয়াত মুনাযযাম মাক্তবের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। তাদের বয়স যখন ৫-৮ তখন ছেলেমেয়ে একসঙ্গে পড়াশোনা করতে পারে। কিন্তু ৯ বছর হয়ে গেলে শরিয়তের নিয়ম অনুসারে তাদের জন্য আলাদা শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
সেই মহিলা শিক্ষিকার (মুয়ালিম্মার) ঘাটতি পূরণের পথচলা শুরু করে আমাদের মুখ্য প্রতিষ্ঠানটি আজ কলেজে পরিণত হয়েছে। আমাদের ১০০ জন ছাত্রীর জন্য আবাসিক শিক্ষার ব্যবস্থা আমরা করেছি। আর বাকি ১০০ জন এই কলেজে অনাবাসিক হিসেবে পড়াশোনা করে। হায়দার সাহেব আরও জানান, আমরা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়ার পর এই কলেজে ছাত্রীদের ভর্তি করি। আমাদের মূলকেন্দ্র ‘দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ’ ছাড়াও ইতিমধ্যে আরও বড় ৫টি কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এগুলি অবশ্য এখনও অনাবাসিক। এই কেন্দ্রগুলি রয়েছে কাটোয়া, উলুবেড়িয়া, সাঁতরাগাছি, মেটিয়াবুরুজে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর জানালেন জনাব হায়দার আলি সাহেব। তিনি বলেন, দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে মেয়েরা যখন এখানে দু’বছরের কোর্সে ভর্তি হচ্ছে তখন তারা ডিগ্রি কলেজ থেকে যাতে স্নাতক সার্টিফিকেট নিতে পারে তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা নেতাজি সুভাষ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটা সমঝোতায় এসেছি। যাতে আমাদের ছাত্রীরা সেখানে ভর্তি হয়ে স্নাতক ডিগ্রি হাসিল করতে পারে। হায়দার সাহেব বলেন, আমাদের এই দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ সম্পর্কে আমরা গর্বের সঙ্গে বলে থাকি, আমাদের এখানে সব মেধার সব বিত্তের। তা সে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা ধনী হোক, তারা পড়শোনা করছে। মেটিয়াবুরুজের কয়েকজন কোটিপতি ব্যবসায়ীর মেয়েরা যেমন পড়াশোনা করছে, তেমনি বাংলার প্রখ্যাত আলেম ও মুফতির মেয়েরাও এখানে এসে পড়াশোনা করছে। এই সমতা এই সমান সুযোগ আমাদের গর্ব। তিনি বলেন, আমরা চাই ১০টি গ্রামকে ভিত্তি করে আমাদের এক একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। আর আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজও শুরু করেছি।
গত পাঁচবছরে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার কাজ করে চলেছে এই কলেজ। এই কলেজের প্রধান লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়ন। তার জন্য চাই প্রকৃত শিক্ষা। সেই পাঠদানই করে চলেছেন দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ-এর শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বর্তমানে অসংখ্য-কলেজ রয়েছে। কিন্তু তাও পুঁথিগত শিক্ষার সঙ্গে ব্যবহারিক জীবনের শিক্ষার কোথায় অসামঞ্জস্য থেকে যাচ্ছে। হারাচ্ছে মনুষ্যত্ব। হারিয়ে যাচ্ছে বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা করার ক্ষমতা। শিক্ষা মানেই যে আত্মার উদ্বোধন, তাও আজ মানুষ ভুলতে বসেছে। বিবেকহীন কাজ করতেও পিছপা হচ্ছে না একশ্রেণির মানুষ। তাহলে কি শিক্ষার সঙ্গে ব্যবহারিক জীবনের কোনও খামতি থেকে যাচ্ছে?
কিন্তু ব্যতিক্রমও রয়েছে। দুনিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দ্বীন-এর সেবার করার পাঠ দিয়ে চলেছে হাওড়ার বাঁকড়ায় গড়ে ওঠা দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ (ডিএমসি)।
‘পুবের কলম’ পত্রিকায় এই দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও সাফল্য সম্পর্কে আগেও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এবার ‘পুবের কলম’ পত্রিকার সাংবাদিক আসিফ রেজা আনসারি, বিপাশা চক্রবর্তী, চিত্র সাংবাদিক সঞ্জয় পুরকাইত এই প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যা বলেন তার অংশ বিশেষ তুলে ধরা হচ্ছে।
এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও বিকাশের সঙ্গে যিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ ও ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাসুদ রহমান জানালেন, বছর ছয়েক আগে এই কলেজের পথচলা শুরু। প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া, রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে, যাদের অভিভাবকরা উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজে পাঠাতে ইতস্তত করেন তাদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। আর এজন্য আমরা উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলেছি। এখানে মরাল সায়েন্স, ইসলামিক স্টাডিজ, কম্পিউটার সায়েন্স, হোম ম্যানেজমেন্ট, স্পোকেন ইংলিশ, নিউট্রিশন, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয় শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
চিকিৎসক আসার আগে পর্যন্ত যাতে এখানকার শিক্ষার্থীরা পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সেবা করতে পারে, তারও প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয়। আসলে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে যেগুলি লাগে, সেইগুলিই এখানে পড়ানো হয়। আমরা চাই শিক্ষা যেন শুধু পুঁথির ভিতর আবদ্ধ না থাকে। একজন শিক্ষার্থী যেন তার শিক্ষা ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। আগামী দিনে আমাদের ইচ্ছে আছে একটি নার্সিং কলেজ করার। একটি মেয়ে যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তার জন্য তাদের সেই দিকে এগিয়ে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য। এই কলেজ বিল্ডিংয়ের পাশাপাশি নতুন ভবন তৈরির কাজ চলছে। আমি মনে করি, একটি মেয়ে শিক্ষিত হলেই সমাজ শিক্ষিত হবে। তাহলেই আমাদের দেশ ‘বিশ্বের এক নম্বর’ দেশের তালিকায় আসবে। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শিক্ষা ও কাজের মাধ্যমে মেয়েদের ক্ষমতায়ন।
পাঁচলা আজিম মোয়াজ্জেম হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক তথা দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর মুহাম্মদ রুহুল আমিনের কথায়, যখন থেকে এই স্কুলের জন্ম তখন থেকেই এই স্কুলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছি। সেই ২০১৬ সাল থেকে পথচলা শুরু হয়েছে, এখন ২০২২ সাল। খুব সুন্দরভাবেই মেয়েরা তাদের এই স্কুল থেকে নিজেদের আরও শিক্ষিত করে তুলেছে। মুহাম্মদ রুহুল আমিন আরও জানান, আমরা চাই নারী শিক্ষার প্রসার। কারণ আমরা মনে করি একজন নারী শিক্ষিত হলেই, গোটা সমাজ শিক্ষিত হবে। লক্ষ্য নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন। বর্তমান সময়েও আমাদের দেশ বহু স্থানে কন্যাসন্তান ব্রাত্য। আমরা চাই মেয়েরা নিজেদের প্রমাণ করুক স্বাধীনভাবে বাঁচুক। এই কলেজে মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষা সব কিছুই দেওয়া হয়। কলেজ জীবনের পাঁচটি বিষয় ও মাদ্রাসা কয়েকটি সাবজেক্ট পড়ানো হয়। একটি মেয়ে আজ যে কন্যা, এরপর সে স্ত্রী একদিন সে মা। কাজেই আমরা মনে করি, একজন মেয়েকে যদি সুন্দর আচার সংস্কৃতি শেখানো যায়, তাহলে একটি সুন্দর পরিবার গড়ে উঠবে। আর আমরা একটি সুস্থ সুন্দর সমাজ পাব। একদিন ২০-২২ জন মেয়ে নিয়ে দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ শুরু হয়েছিল। আজ সেখানেই ১০০-র বেশি ছাত্রী। আমার স্ত্রী কানিজ ফতিমা হোস্টেল সুপার। তিনিও তাঁর দায়িত্ব গুরুত্ব সহকারে পালন করে চলেছেন।
দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শেখ মুরসালিন বলেন, সমাজের মধ্যে একটি অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে, কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে সেই শিক্ষার প্রয়োগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও একটা দূরত্ব রয়েছে। এই স্কুলের মাধ্যমে আমরা সেই সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করে চলেছি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর একজন ছাত্রী আমাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে জেনারেল কলেজেও পড়াশোনা করতে পারবে। ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার মেলবন্ধনে আমরা মেয়েদের শিক্ষিত করার ব্রত নিয়েছি। কম্পিউটার থেকে, প্রাথমিক চিকিৎসা সবরকম শিক্ষাই দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আরও দু’টি ভবন তৈরির কাজ চলছে। কারণ, আমাদের এখানে আবাসিক ও অনাবাসিক দুই ধরনের পড়ারই সুবিধা আছে। আধুনিক সময়ে একজন ছাত্রী যাতে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, সেটাও আমাদের উদ্দেশ্য। আর তারা যেন কুরআন ও সীরাতের আলোকে শুধু নিজে নয়, সমাজ জীবনেও পরিবর্তন আনতে পারে। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের আর একটি বড় দিক হচ্ছে, আমাদের ছাত্রীরা পরবর্তীতে শিক্ষিকা হয়ে একদিকে যেমন শিক্ষায় দিশা দেখাচ্ছে, অন্যদিকে তারা নিজেদের যোগ্যতায় কর্মসংস্থানও করে নিচ্ছে।
ছাত্রী শেক কাশমীরা, আতিকা আহমেদ, নাসরিন খাতুন-এর কথায় এই স্কুলে পড়ার পর থেকেই নিজের মধ্যে অদ্ভূত পরিবর্তন লক্ষ্য করি। সব থেকে বড় কথা অন্যান্য স্কুল-কলেজে যে চাপ থাকে সেই রকম কিছু এখানে পাই না। স্বাধীনভাবেই পড়াশোনা করতে পারি। কোনও কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে আমরা শিক্ষিকাদের কাছেও বুঝে নিই। তারাও পরম যত্ন সহকারে আমাদের সেই বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করেন। সকাল ৯.৪০ থেকে বিকেল ৪টে এখানে ক্লাস হয়ে থাকে। তবে তার পরেও শিক্ষিকার সঙ্গে আমরা যে কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলি। মাদ্রাসা শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক শিক্ষারও পাঠ দেওয়া হয়। ব্যবহারিক জীবন সহবৎ, আচার আচরণের শিক্ষা পেয়ে থাকি। আমরা সব সময় মনে করি, এই শিক্ষা যেন আমরা দ্বীন-এর কাজে লাগাতে পারি।
বর্তমান সময়ে ইংরেজির ব্যবহার খুব প্রয়োজনীয়। তাই সেই শিক্ষাও আমরা পেয়ে থাকি। পড়াশোনার পাশাপাশি কালচারাল ও খেলাধুলোর দিকেও নজর দেওয়া হয়। নাটক, গান, নাচ, আবৃত্তির পাশাপাশি খেলার দিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। গ্রন্থাগার থেকেও বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার সুযোগ পাই আমরা। বিভিন্ন মনীষিদের বই পড়ার পাশাপাশি পাঠ্য পুস্তক, ধর্মীয় বইও পড়তে পারি। আমাদের লক্ষ্য দ্বীন-এর সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখা। ক্লাস শুরুর আগে আমাদের প্রার্থনা হয়। নামায পড়া আর মেডিটেশন করানো হয়।
শিক্ষিকা ফ্রিনা খাতুন হালদার জানান, আমি এখানে শিক্ষার্থী ছিলাম। দুবছরের কোর্স সম্পূর্ণ করার পর আমি এখানে শিক্ষকতা করছি। রুটিন অনুযায়ী ক্লাস থাকে। আমরা একশো শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। যারা খুব কমজোরি শিক্ষার্থী তাদের আলাদা করে সময় দিয়ে থাকি। বাড়িতে ফোন করলেও আলাদাভাবে বুঝিয়ে দিই।
শিক্ষিকা নাফিসা খাতুনও জানান, দুবছর কোর্স সম্পূর্ণ করার পর তিনি শিক্ষকতা করছেন। ২০১৬ সালের ব্যাচের তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। তার পর থেকে এখানকার শিক্ষিকা। ডিএমসি-তে আসার পরে শিক্ষার্থীদের অনেক উন্নতি হয়েছে বলে আমাদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, এটি আমাদের বড় পাওনা। হায়দরাবাদ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ইংরেজির ক্লাস চলছে।
অভিভাবক নুর মহম্মদ লস্করের কথায়, সাধারণ শিক্ষা দেওয়ার পাশপাশি সহবৎ, সংস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। পর্দার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা দেওয়া হয়। আমার আর্থিক অবস্থা সেইরকম নয়। তাও আমার এখানে পড়াতে কোনও অসুবিধা হয় না। দুনিয়াকে সামনে রেখে যে দ্বীন-এর কাজ করা যায় সেটা এই ডিএমএস-এ খুব ভালো ভাবে শেখানো হয়। আমার এক মেয়ে এখানে পড়াশোনা করে শিক্ষকতা করত। এখন সে বিবাহিত। অপর দুই মেয়ে পড়াশোনা করছে।
অপর এক অভিভাবক সেখ তৌফিক আলির কথায়, ডিএমসি শুরু হয়েছিল অঙ্কুরহাটিতে। তার পর এই খানে স্থানান্তরিত হয়েছে। আসতে আসতে উন্নয়ন করেছে। শিক্ষার্থী বাড়তে থাকার কারণে এই কলেজ ভবনের পাশে আরও দুটি ভবন তৈরি হচ্ছে। আমার বড় মেয়ে এখান থেকে দু’ বছরের কোর্স করেছে। মেজো মেয়ে পড়াশোনা করছে। ডিএমসি মানে আমি মনে করি মানুষ গড়ার কারখানা। বর্তমান সময়ে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য আমরা ভুলে গেছি। সেই মানুষ তৈরির কাজ করে চলেছে দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ।