শ্রীনগর, ২ সেপ্টেম্বর: প্রয়াত জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন হুরিয়ত কনফারেন্স নেতা নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। মৃত্যুকালে গিলানির বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বুধবার শ্রীনগরে নিজের বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ওই প্রাক্তন হুরিয়ত কনফারেন্স নেতা। দীর্ঘদিন থেকেই ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মে ’জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবন্দি ছিলেন গিলানি। বৃহস্পতিবার দাফন করা হয় তাকে।
বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন গিলানি। এক বছর আগেই অব্যাহতি নিয়েছিলেন সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম ও বিচ্ছিন্নতাবাদী জোট হুরিয়াতের দায়িত্ব থেকে।
গিলানির মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে শোক জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) নেতা মেহবুবা মুফতি।
গিলানির মৃত্যুর পরই তার হায়দারপোরার বাড়িসহ পুরো উপত্যকায় নিরাপত্তা জোরদার করে প্রশাসন। নৈরাজ্যের শঙ্কায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে মুখতার আহমেদ ওয়াজাসহ হুরিয়াতের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে।
২৭ বছর যুক্ত থাকার পর হুরিয়াত ছাড়েন গিলানি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ আইএসআইয়ের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির জেরে তিনি হুরিয়াত ছেড়েছিলেন।
উপত্যকার সর্ববৃহৎ বিচ্ছিন্নতাবাদী জোট থেকে পদত্যাগ করার সময় গিলানি বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রের কারণেই ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ঠেকানো যায়নি।
কাশ্মীর বিধানসভার সোপোরে আসন থেকে ১৯৭২, ১৯৭৭ ও ১৯৮৭ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।
পর্যবেক্ষকমহলের মতে,২০২০ সালে অভ্যন্তরীণ কলহের জেরে হুরিয়তের নেতৃত্বের পদ থেকে ইস্তফা দেন গিলানি। কাশ্মীরবাসীর স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে হুরিয়তের কিছু নেতা আর্থিক তছরুপে মেতে রয়েছেন এবং শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন বলে সেই সময় অভিযোগ করেন তিনি।
নয়ের দশক থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় হুরিয়ত কনফারেন্সকে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। পরবর্তী সময়ে হুরিয়তের আদর্শকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে উঠে আসেন মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী তরুণ নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক।
তারপরই তৈরি হয় মতবিরোধ।দেশভাগের সময় ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে নব্বইয়ে উপত্যকায় বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী ছিলেন তিনি।