পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইন্তেকাল উস্তাদ রশিদ খান (ইন্না লিল্লাহ……)। এদিন দুপুর ৩.৪৫ নাগাদ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৫। আজ সকাল থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ২২ নভেম্বর থেকে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে।
বিগত বেশ কিছু দিন ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন উস্তাদ রশিদ খান। গত কয়েক বছর ধরেই প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি৷ চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন৷ কিন্তু তারই মধ্যে আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হন সঙ্গীত শিল্পী৷ মঙ্গলবার তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখনই তড়িঘড়ি ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে৷ অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত সঙ্গীত তথা বিনোদন জগৎ।
এদিন রাশিদ খানকে হাসপাতালে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়াল। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য খুব অল্প বয়সে চলে গেলেন। রাশিদ নেই ভাবতে পারছি না। রাশিদ আমাকে মা বলে ডাকত। অনেক শিল্পী গড়েছে ওহ। পরিবারের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। আজকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত হাসপাতালে মরদেহ রাখা হবে। তারপর রাখা হবে পিস হেভেনে। বুধবার সকাল ৯ টাই রবীন্দ্র সদনে তাঁকে নিয়ে আসা হবে। গান স্যালুটের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
২০০৬ সালে একই বছরে তিনি ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড’ সম্মানে ভূষিত হন। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত হন শিল্পী। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় ‘আওগে যব তুম সজনা’ গানের মাধ্যমে সারা দেশের মন জয় করে নেন তিনি। শাহরুখ খানের ‘মাই নেম ইজ খান’ সিনেমায় ‘আল্লা হ্যায় রহেম’ গানটি গেয়েছেন শিল্পী। ‘মান্টো’র ‘বোল কে লব আজাদ হ্যায়’ থেকে ‘মিতিন মাসি’র ‘বরসাত সাওয়ান’— প্রত্যেক গানে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন শিল্পী।
উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে জন্ম রাশিদ খানের। কিন্তু ছোটবেলাতেই কলকাতায় চলে এসেছিলেন। তার পর থেকে এই বাংলাকেই নিজের কর্মভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিল্পী। ছোটবেলা থেকেই তাঁর তালিম শুরু হয়েছিল। মাত্র ১০- ১১ বছর দিল্লির কনসার্টে গান গেয়েছিলেন রাশিদ খান। প্রায় পাঁচ-ছহাজার দর্শকের মাঝে গাইতে একটু ভয়ই পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বয়সেই তাঁর বন্দিশ শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।