পুবের কলম প্রতিবেদকঃ রাজ্যে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত কয়েকদিনে যেভাবে করোনা গ্রাফ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে অশনি মেঘ দেখছে চিকিৎসক মহল। উদ্বিঘ্ন কলকাতা পুরসভাও। কারণ সংক্রমণের নিরিখে কলকাতাতেই সবচেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে জানা গিয়েছে। এরমধ্যে উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণ কলকাতাই বর্তমানে পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরের তুলনায় দক্ষিণ কলকাতায় সংক্রমণের হার এবং আক্রান্তের সংখ্যা দুই বেশি। বিশেষত, সাত, আট, দশ ও বারো নম্বর বরো এলাকায় করোনা ক্রমেই বাড়ছে। উত্তর কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও দুই ও তিন নম্বর বরো এলাকায় সংক্রমণ কিছুটা বাড়ছে। করোনার এই বাড়বাড়ন্তের পিছনে সাধারণ মানুষের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকেরা।
বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৫। বুধবার এই সংখ্যাটা ছিল ২৯৫। তার আগে সোম ও মঙ্গলবার রাজ্যে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২৪ ও ৪০৬। জুলাইয়ের শেষের দিকে রাজ্যে করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন চিকিৎসকরা। এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এরমধ্যে কলকাতার পরিস্থিতি খারাপের দিকেই এগোচ্ছে বলে মত চিকিৎসক মহলের। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত ৫ জুন কলকাতা পুরসভা এলাকায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন ২০ জন। ঠিক ১৫ দিন পরে, ২০ জুন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৯১-এ। অর্থাৎ, দু’সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে। কলকাতায় গত ১২ জুন করোনা আক্রান্ত হন ৬০ জন। ১৪ জুন আক্রান্ত হন ১০৫ জন। এরপর ১৮, ১৯ ও ২০ জুন করোনায় আক্রান্ত হন যথাক্রমে ১৩৯ ১১৫ ও ১৯১ জন। অথচ, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শহরে করোনা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। হঠাৎ করে সংক্রমণের গ্রাফ উর্দ্ধমুখী হওয়ায় কিছুটা উদ্বেগই প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা।
এদিকে করোনা বাড়বাড়ন্ত রুখতে নয়া পরীক্ষা বিধি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ১৩ মে বৈঠকে বসে বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই বৈঠকের পর নবান্নের তরফে ঘোষণা করা হয়, হাসপাতালে যদি কেউ সর্দি- কাশি-জ্বর নিয়ে ভর্তি হন, সেক্ষেত্রে রোগীর করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪-র নিচে থাকলে ও গলা, নাক, শ্বাসযন্ত্রের অপারেশনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।