পারিজাত মোল্লা: চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে নিরাপত্তা চেয়ে মামলা দাখিল করলেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির নব নির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বা।
কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ, -‘ বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।এমনকি স্বরাষ্ট্র বিভাগকেও জানিয়েছেন’। তাই নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সাগরদিঘির সদ্য নির্বাচিত বাম-কংগ্রেস জোটের বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস।
এর পাশাপাশি ওড়ালেন দলবদলের জল্পনা।রাজ্যে একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক তিনি। সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে রাজ্যে খাতা খুলেছে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী।
চলতি সপ্তাহে তাঁকে নিয়েই সম্প্রতি মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।আর অভিষেকের সেই মন্তব্য প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বাইরন নিজেও। আর তা নিয়েই দলবদলের জল্পনা শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে।
প্রশ্ন ওঠে তবে কী বাম-কংগ্রেস জোটের বিধায়কও তৃণমূল শিবিরের দিকে পা বাড়াচ্ছেন ? যদিও সেই জল্পনায় ইতি টানলেন বাইরন নিজেই। বিধায়ক হওয়ার পর থেকে লাগাতার হুমকি ফোন পাওয়ার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিধায়ক।
কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ, কলকাতা পুলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানিয়েও কোনও ফল না-হওয়ার জেরেই হাইকোর্টের দারস্থ হলেন তিনি।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাইরন বিশ্বাসকে বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থী করার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিধায়কের ।সেসময় আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বাইরন। পরে তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে দেখা যায়। পাশাপাশি বিধানসভাতেও হাজির হয়েছিলেন বাইরন। মাঝে তাঁর দলবদলের জল্পনাও ছড়িয়েছিল।
এমনকী তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন বলেও রটে যায় রাজনৈতিক মহলে। যদিও তিনি পরে নিজেই ঘোষণা করে জানান, দল বদলের কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। তিনি যে দলীয় প্রতীকে জয়ী হয়েছেন সেই প্রতীকেই থাকবেন বলেও জোরের সঙ্গে জানিয়েছেন বাইরন।
আগামী সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।বিধায়ক হওয়ার পরই একাধিকবার হুমকি ফোন আসছে তাঁর কাছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই কোনও ক্ষেত্র থেকে সমস্যার সমাধান না পেয়ে অবশেষে আদালতের কাছে গেলেন এই বিধায়ক। আদালতকে ইতিমধ্যেই বাইরন জানিয়েছেন, -‘তিনি নিরাপদ বোধ করছেন না। প্রাণ সংশয় হতে পারে তাঁর’। তাই আদালতের কাছে নিরাপত্তা চাইছেন এই বিধায়ক।
প্রসঙ্গত তৃণমূলের তিন বারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন হয়। সেই ভোটেই তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২২ হাজার ৯৮০ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। সাগরদিঘি আসনে ত্রিমুখী লড়াই হয়।