পুবের কলম প্রতিবেদক: শনিবার কলকাতার প্রেসক্লাবে ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের বাৎসরিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মুক্ত সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আমন্ত্রিত হিসেবে কলকাতা ভিত্তিক সাংবাদিক-সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। ‘সংবাদ মাধ্যম কি বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে সাংবাদিকদের নিরপেক্ষতা বজায়, ফেক নিউজ বন্ধ ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তোলেন আয়োজকরা। এদিনের এই অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রধান ভূমিকা নেন সংস্থার সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, সভাপতি শ্যামলেন্দু মিত্র এবং আহ´য়াক আরিফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর, দৈনিক পুবের কলম-এর সম্পাদক তথা রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, প্রাক্তন পুলিশ কর্তা নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক প্রসূন আচার্য, সাংবাদিক কাজি গোলাম গউস সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, সীতারাম আগওয়াল প্রমুখ।
মূলধারার মিডিয়ায় যুক্ত সাংবাদিক ও মুক্ত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য দাবি-দাওয়া কলকাতা এই সংস্থার পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি চিঠি লিখে আবেদন করা হয়েছে। অবিলম্বে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার সুনিশ্চিতকরণ, সাংবাদিকদের অবসর ভাতা আড়াই হাজার টাকা থেকে দশ হাজার টাকা করা, তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা ইত্যাদি দাবি জানানো হয়েছে।
টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক প্রসূন আচার্য দিল্লির বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কুস্তিগীরদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে একটি হিন্দি কবিতার বাংলা অনুবাদ করে পাঠ করেন। তারপর মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি জানান, মেইন স্ট্রিম মিডিয়া হামাগুড়ি দিয়ে চলছে। ফেক নিউজ প্রচার হচ্ছে। বড় সংবাদমাধ্যমের উপর মানুষ আর বিশ্বাস করছে না বলে মন্তব্য করেন। তবে আলোচনার মূল বিষয় থেকে অনেকটা বাইরে গিয়ে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা নজরুল ইসলাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে নির্বচন কমিশনকেও আক্রমণ করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে পুবের কলম সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান বলেন, কারও উপর রাগ থাকলে তা প্রকাশ করার মাধ্যম আজকের এই ফোরাম নয়। তিনি বলেন, কোনও রাজনৈতিক দলই ধোওয়া তুলসি পাতা নয়। তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার জন্য দায়ী। ইমরান বলেন, গণতন্ত্রে প্রত্যেক মানুষেরই জীবনের অধিকার রয়েছে। সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশেরও জীবনের অধিকারকে বিনষ্ট করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, মারা যাচ্ছে গরিব দুর্বল শ্রেণির মানুষ। তিনি বলেন, কিছু কাগজের উপর মানুষের আস্থা ছিল। এনডিটিভি বহুচাপের মধ্যে থেকেও নিরপেক্ষ ছিল। কিন্তু হাত বদল হয়েছে, এখন আদানির হাতে এসেছে। তিনি বলেন, মনিপুরের সংবাদমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া অনেক খবর তুলে ধরছে। নিউজ পোর্টাল ওয়্যার, রবীশ কুমার ইউটিউবে অনেক সত্য প্রকাশ হচ্ছে। তাই বলব, এখনও সবকিছু হারিয়ে যায়নি। সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি টেলিগ্রাফ পত্রিকার প্রশংসা করেন।