পুবের কলম প্রতিবেদক: থ্যালাসেমিয়া এবং সিকেল সেল ডিজিস রক্তের এই দুই অসুখ রুখতে এইচপিএলসি টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহকে বাধ্যতামূলক করা হল। স্বাস্থ্য দফতরের এক নির্দেশে এমনই জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশে রাজ্যের সব হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজকে বলা হয়েছে, এইচপিএলসি টেস্টের জন্য নমুনা হিসাবে গর্ভধারণের পর থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রসূতির রক্ত সংগ্রহ করতে হবে।
এই নির্দেশে কৈশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের নমুনা সংগ্রহের কথাও বলা হয়েছে। কেউ থ্যালাসেমিয়া কিংবা সিকেল সেল ডিজিজের বাহক কি না, এটা এইচপিএলসি টেস্টের মাধ্যমে জানা যায়।
স্বাস্থ্য দফতরের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালের হেমাটোলজি অ্যান্ড বিএমটি বিভাগের অধিকর্তা, চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, ‘অনেক দিন আগেই এটা হওয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও ভালো। তবে, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, অধিকাংশ প্রসূতিই যেন প্রথম তিন মাসের মধ্যে হাসপাতাল বা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন।’
এই বিষয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক, চিকিৎসক রাজীব দে বলেন, ‘আমাদের সমাজকে থ্যালাসেমিয়া এবং সিকেল সেল ডিজিজ থেকে মুক্ত রাখতে হলে অন্যতম উপায় হল প্রসূতি মায়েদের এইচপিএলসি টেস্ট করে দেখা।’
চিকিৎসক রাজীব দে জানিয়েছেন, প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসের মধ্যে প্রসূতির এইচপিএলসি টেস্ট করে দেখা যায় তিনি থ্যালাসেমিয়া কিংবা সিকেল সেল ডিজিজের বাহক কি না। তিনি যদি বাহক হন তা হলে তখন তাঁর স্বামীর এইচপিএলসি টেস্ট করে দেখা হয় তিনিও বাহক কি না। দু’ জনেই বাহক হলে তখন ওই প্রসূতির গর্ভস্থ ভ্রূণের পরীক্ষা করে দেখা হয়। এই ক্ষেত্রে এক, সুস্থ ভ্রূণ হতে পারে। দুই, থ্যালাসেমিয়া কিংবা সিকেল সেল ডিজিজের বাহক হতে পারে ভ্রূণ। তিন, থ্যালাসেমিয়া কিংবা সিকেল সেল ডিজিসের রোগী হতে পারে ভ্রূণ। যদি রোগী হিসাবে নির্ণয় হয় ভ্রূণ, তখন আইন অনুযায়ী গর্ভপাত করানোর বিষয়টি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন অংশের তরফে জানানো হয়েছে, সমাজকে থ্যালাসেমিয়া এবং সিকেল সেল ডিজিজ থেকে মুক্ত করতে হলে এই রোগ নিয়ে যাতে কোনও শিশুর জন্ম না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিতের প্রয়োজন।
এর জন্য প্রথম তিন মাসের মধ্যে প্রসূতির এইচপিএলসি টেস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশ যথাযথভাবে পালন হলে, সমাজকে থ্যালাসেমিয়া এবং সিকেল সেল ডিজিস থেকে মুক্ত করার পথে এগিয়ে চলা সম্ভব।