পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০১৯ সালে চাঁদকে ছোঁয়ার স্বপ্ন ব্যর্থ হয়েছিল। ব্যর্থতা থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ভারত। ২০২৩ সালে ফের চন্দ্রাভিযানে নামে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। বুধবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামল ভারতের চন্দ্রযান ৩। বুধবার সন্ধে ৬:০৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করে ল্যান্ডার বিক্রম। এই প্রথমবার পৃথিবীর বিপরীত দিকে থাকা চাঁদের অন্ধকার, দুর্গম অংশে পৌঁছল কোনও দেশের চন্দ্রযান। এই অভিযান ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ আগামিদিনে আরও অনেকগুলি অভিযান সাজানো রয়েছে ইসরোর। আকাশ ছাড়িয়েও আরও অনেক বড় জায়গায় পৌঁছনোর লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ইসরো। গগনায়ন, আদিত্য এল-১ ও জাক্সা একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে ইসরো।
গগনায়ন মিশন: রাশিয়া, আমেরিকার মতো মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ভারতেরও। ২০১৮ সালের ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান থেকেই ‘গগনায়ন’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইসরোর ইতিহাসে এটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মিশন হতে চলেছে। তিন ধাপে এই মিশন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর। প্রথম দুই ধাপে মানবিহীন মহাকাশযান পাঠানো হবে। প্রথম ধাপে সাফল্য মিললে, দ্বিতীয় ধাপে মহাকাশযানে রোবট পাঠানো হবে। এই রোবটের নাম ‘ব্যোম মিত্র’। এই দুই ধাপে সাফল্য মিললে, শেষ ভাগে তিনজন মহাকাশচারী পাঠানো হতে পারে। ২০২৪ সালের গোড়ার দিকেই এই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন: জাপানের সঙ্গে সহযোগিতায় হতে চলেছে ইসরোর পরবর্তী চন্দ্রাভিযান। জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি বা জাক্সা ও ইসরোর মিলিত উদ্যোগে লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন পরিচালিত হবে। লুপেক্স মিশনের জন্য রোভার ও ল্যান্ডারও তৈরি করা হচ্ছে দুই দেশের সহযোগিতায়। নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশও থাকবে। চাঁদে জলের অস্তিত্বের পাশাপাশি যান চলাচল ও রাত্রিযাপন সম্ভব কি না, তা খুঁজে বের করা এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
আদিত্য এল-১ মিশন: শুধু চাঁদই নয়, সূর্য নিয়েও গবেষণা করতে চায় ইসরো। সেই লক্ষ্যেই আদিত্য-এল১ স্যাটেলাইট পাঠাতে চলেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এই কৃত্রিম উপগ্রহ সূর্যের ল্যাগরানগিয়ান পয়েন্ট-১ এর কাছে ফাঁপা কক্ষপথে অবস্থান করবে। এরফলে সূর্য গ্রহণ ছাড়াই যাবতীয় গবেষণা করা যাবে। করোনা সংক্রমণের জন্য এই প্রকল্প পিছিয়ে গিয়েছিল। ২০২৩ সালে তা পাঠানো হয়। ৩৭৮.৫৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল এই প্রকল্পের জন্য।
মঙ্গলায়ন-২ মিশন: ফের একবার মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠাতে প্রস্তুত ইসরো। এবারের প্রকল্পে মহাকাশযানে হাইপারস্পেকট্রাল ক্যামেরা ও র্যাডার থাকবে। তবে এই প্রকল্পের কাজ কবে শুরু হবে, তা এখনও জানা যায়নি। মঙ্গল মিশনের জন্য ল্যান্ডারও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্র মিশন: মঙ্গলের পর শুক্র গ্রহেও যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে ইসরোর। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য নাম হতে পারে শুক্রযান। প্রাথমিকভাবে ২০২৪ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা থাকলেও, তা ২০৩১ সালে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।