পারিজাত মোল্লাঃ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার নির্দেশ দিল।সেইসাথে হনুমান জয়ন্তী নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যাতে অশান্তি এড়ানো যায়। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন – “এইভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলায় ( একমাত্র ভোট বাদে) থাকা নজিরবিহীন বলা যায়, “।
তবে কলকাতা হাইকোর্ট এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এটি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলায় হস্তক্ষেপ করা নয়, যেভাবে রামনবমী ঘিরে অশান্তির ধারাবাহিক ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অশান্তি এড়াতে এই নির্দেশ। রিষড়া নিবাসী এক জেলা দায়রা বিচারক কলকাতা হাইকোর্ট কে তাঁর পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছেন। যার পরিপেক্ষিতে সারা রাজ্যে বিচারক পরিবার গুলিকে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে।
বুধবার রামনবমীকে ঘিরে যে অশান্তি হয়েছে তা এড়াতে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে রাজ্য পুলিশের সঙ্গেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যের সমস্ত মিছিলে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।হনুমান জয়ন্তীতে মিছিল করার প্রায় ২০০০ আবেদন জমা পড়েছে রাজ্য সরকারের কাছে।
সেই মিছিলে (স্পর্শকাতর এলাকায়) আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন রাজ্যের তরফে হনুমান জয়ন্তীতে মিছিলের আবেদনের কথা জানানো হয় আদালতে।কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হীরন্ময় ভটাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, -‘স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করে কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চাইতে হবে রাজ্যকে’।
এর পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বুধবার থেকেই যাতে পুলিশ রুট মার্চ করে, সেই নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।আদালতের নির্দেশ, স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে সিসিটিভি থাকবে। ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগের ঘটনার নিরিখে বলা যায়, আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়া উচিত্ রাজ্যের।’
ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন, তা রাজ্য চাইতে পারে কেন্দ্রের কাছে। একই সঙ্গে জেলা আদালতের বিচারকদের নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত করা হয়, তাঁদের কাজ করতে যাতে বাধা না দেওয়া হয়, সেটাও রাজ্যকে দেখতে হবে বলেই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।সাম্প্রতিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে এজিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এই ঘটনা যে আর ঘটবে না, এই আশ্বাস কীভাবে দেবেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘দুর্গাপুজোর সময়ও দেখেছি পুলিশের পক্ষের বিপুল সংখ্যক দর্শণার্থী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।’
এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এদিন আদালতে জানান, কলকাতা পুলিশ ২৭ টি শর্তের একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে মিছিলের জন্য। সেখানে বলা হয়েছে, যাঁরা আয়োজক, কিছু ঘটলে তাঁদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। কোন রুটে যাবে মিছিল, কতজন থাকবে, সেটা পুলিশ ঠিক করবে। শুরু এবং শেষ হওয়ার সময়ও বলে দেওয়া হবে।
এজি আরও উল্লেখ করেন, রামনবমী বা হনুমান জয়ন্তী কলকাতায় খুব জনপ্রিয় নয়। শেষ পাঁচ বছরে এগুলো দেখা যাচ্ছে বলে জানান এজি।এদিন শুনানির শেষে সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘ছাদ থেকে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের গোয়েন্দারা কী করছিল? এটা তাদের ব্যর্থতা।