ইনামুল হক, বসিরহাট: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ইছামতির পাড়ে অবস্থিত ৪০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন জনপদ টাকি পৌরসভা এলাকার মানুষ আজ উন্নয়নের জোয়ারে সুফল পাচ্ছে। টাকির পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নমুখী ধারাকে এগিয়ে রেখে টাকি পৌরসভা আজ ১৫৪ বছর তম বর্ষে পা রাখলো।ভারত তথা বিদেশের মানচিত্রে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে টাকি। পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে নিজেদের ভৌগোলিক রেখায় সীমাবদ্ধ করতে পেরেছে। আর এই পর্যটনের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার টাকি পৌরসভার বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহ্য ,রাজবাড়ি থেকে জমিদার বাড়ির পুরনো দালান কোটা, ভাঙ্গা ইটের ফাঁকে রূপকথার গল্প আজও রয়েছে। সেগুলোকে আরো বেশি করে ঐতিহ্যমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছে টাকি পৌরসভা।একদিকে ওপারে বাংলাদেশ, এপারে টাকি পৌরসভা। দুই দেশের মধ্য দিয়ে ইছামতির চলা ছলাৎ ঢেউ যেন পর্যটকদের কাছে এক অন্যতম নিদর্শন। ইছামতির পাড়ে রয়েছে সুন্দরবনের মতো একটি মিনি সুন্দরবন। সুন্দরী গরান, হেতাল, গেওয়া, কাকরা বিভিন্ন প্রজাতির ম্যানগ্রোভ শোভা পায়। সেইসঙ্গে পাখিদের কলকাকলির কিচিরমিচির পর্যটকদের মুগ্ধ করে দেয়। ১৬টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই পৌরসভার উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে টাকি গ্রামীণ হাসপাতাল দেশের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করেছে। বিদ্যুৎ, আলো, রাস্তাঘাট পর্যটন পরিবহন ব্যবস্থা মিলে টাকি পৌরসভা এক অপরূপ সৌন্দর্যের মনিকোঠায় দাঁড়িয়ে আছে। রবিবার ১৫৪ তম বছরে এবার টাকি পৌরসভার জন্মদিন পালন হল টাকি সংস্কৃতি মঞ্চে। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে, কেক কেটে জন্মদিন পালন করলেন টাকি পৌরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক গাজী ,উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য শাহানুর মন্ডল,বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক চিকিৎসক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় , টাকি পৌরসভার সরকারি আধিকারিক মৃদুল হালদার সহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মীরা। ১৬ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহ টাকির নাগরিকরা এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। এই জন্মদিন পালনের মধ্যে নতুন সংকল্প নিল টাকি পৌরসভা। প্রতিটা ঘরে ঘরে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার নিল তারা। অন্যদিকে টাকিকে আরো বেশি উন্নয়ন্মুখী করতে উদ্যোগে হয়েছে রাজ্য সরকার। ২০২২ সালের ২৯ শে নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুন্দরবন সফরে এসে টাকিকে ভারতবর্ষের সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন ।অন্যদিকে টাকির সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। টাকি পৌরসভা বছরের প্রতিটা দিনই প্রায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মানুষ ইচ্ছামতির পারে ভিড় জমান। আর সেটাকে আগামী দিনে আরো বেশি পর্যটনমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছে টাকি পৌরসভা।