দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাব্বিশটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে আসতেই বগটুই গ্রামে তল্লাশির বহর বাড়াল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, সিবিআই। বৃহস্পতিবার অগ্নিসংযোগে খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লালন সেখের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই সিবিআই জানতে পেরেছে ২১ মার্চ ভাদু সেখ খুনের ঘটনার পর তার অনুগামীদের মধ্যে কারা কারা হাসপাতালে উপস্থিত ছিল এবং কখন তারা বেরিয়ে যায়।
এদিন অভিযুক্ত লালন সেখের বাড়ি যায় সিবিআইয়ের একটি টিম। সেখানে তারা লক্ষ্য করে বাড়ির বাইরে ফটিক সেখের বাড়ির দিকে তাক করা একটি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এর ফলে ঘটনার দিন কতজন সেই বাড়ির সামনে জমায়েত হয় বা তারপর তারা কি করে সব কিছু পরিস্কার হওয়ার কথা। কেননা মাত্র কয়েক পা দূরে আক্রান্ত ফটিক সেখের বাড়ি। পাশাপাশি ঘটনার দিন ফটিক সেখের বাড়িতে কি কি ঘটেছিল তার ছবি ধরা পড়বে।
এরপর সিবিআই টিম লালন সেখের বাড়ির তালা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করে। সিসিটিভির হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করার চেষ্টা করে। যদিও তা পাওয়া গেছে কিনা জানা যায় নি। তালাবন্ধ লালন সেখের বাড়ি থেকে লালনের পোষ্য একটি অ্যালসেশিয়ান কুকুরের সন্ধান মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, রামপুরহাট থানার আইসি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছাড়াও একজন এসআই এবং সহকারি এসআইকে সিবিআই বুধবার জেরা করে। পাশাপাশি আনারুল হোসেনের মোবাইল ছাড়াও আরও ছয়জন অভিযুক্তর মোবাইল সিজ করে সিবিআই দেখতে চায় যে ঘটনার দিন তাদের মধ্যে কোনও মেসেজ বা ফোন হয়েছিল কিনা। এছাড়াও একুশে মার্চ ভাদু খুনের সিসিটিভি ফুটেজে সিবিআই দেখতে পেয়েছে চার ব্যক্তি হেলমেট পরে মোটর বাইকে করে ঘটনাস্থলে আসে। তাদের মধ্যে একজন ভাদুর মাথা লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। বাকি দুজন চারি পাশে বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর বুধবার রাতে আরও দুজনকে পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃতেরা হল ভাসান শেখ ও সফিক শেখ। নলহাটি ও মাড়গ্রাম থেকে তাদের পাকড়াও করা হয়। এর ফলে ভাদু খুনে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬।
উল্লেখ্য, ভাদু খুনের ঘটনায় ১০ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। সরকারি আইনজীবী সুরজিৎ সিনহা বলেন, বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্তকে আদালতে তুললে পুলিশ চোদ্দ দিনের পুলিশ হেফাজত চায় রামপুরহাট এসিজেএম শৌভিক দে অভিযুক্তদের নদিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বৈদ্যুতিন মাধ্যমে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে পাঠানো রামপুরহাট বিধায়ক আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি ফাঁস হওয়ার পরই তড়িঘড়ি বোলপুর দলীয় কার্যালয়ে প্রেস মিট ডাকেন অনুব্রত। বোলপুর দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, আনারুলকে অনেক আগেই সরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম আশীষদাকে। কিন্তু তাকে পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন রামপুরহাটের বিধায়ক আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই শোরগোল পড়ে যায় জেলা জুড়ে।