পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ‘দিবানিদ্রা’ ভালো না ক্ষতিকর! এই নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে থাকেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। অনেকেই মনে করেন ‘দুপুরের ঘুম’ দিনের বাকি সময় সুন্দর কাটাতে সাহায্য করে আবার অনেকেই বলে এটা শরীরের জন্য ভালো নয় বরং বিষণ্ণতা সৃষ্টি করে। তবে এই ঘুম কি শরীরের জন্য আদৌ ভালো? নাকি রয়েছে অজানা কোনও ক্ষতিকর দিক! সম্প্রতি এই নিয়েই গবেষণা করেছে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং উরুগুয়ের ইউনিভার্সিটি অফ রিপাবলিকের গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা গেছে দপুরের পর স্বল্পমেয়াদি হালকা ঘুম শরীরের জন্য খুব উপকারী। সুযোগ থাকলে, দুপুর কিংবা বিকেলে ‘ন্যাপ’ অর্থাৎ ছোট্ট ঘুম নেওয়ার অভ্যাস স্বাস্থের জন্য উপকারী। তবে ছন্নছাড়া রুটিন নয়, এই ঘুমটি হতে হবে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে।
গবেষণা বলছে, চা কফি জাতীয় ‘পানীয় দ্রব্য’ নয় ক্লান্তি মোচনে দিনের বেলায় ‘ছোট্ট ঘুম’ মানব মস্তিষ্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ঘুমে মানসিক চাপ কমে, মন ভালো হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘ছোট্ট ঘুম’ মানব শরীরে নিগ্ধ প্রভাব ফেলে। তবে দুপুরের ‘ন্যাপ’শরীরে প্রশান্তি দিলেও, সেই ঘুম মাত্রারিক্ত হলে ডেকে আনে নানাবিধ রোগ।
গবেষকরা যুক্তরাজ্যের বায়োব্যাঙ্ক থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৩৫,০৮০ জনের ওপর সমীক্ষা চালায়। তাদের শারীরিক অবস্থা ও রোজনামচা পর্যালোচনা করে এই তথ্য উঠে এসেছে যে ‘ভালো নেই দুপুরে না ঘুমিয়ে থাকা মানুষগুলো’। অন্যদিকে দুপুরে ঘুম দেওয়া মানুষগুলো তুলনামূলক ভালো ফলাফল করছে।
দুপুরের ঘুমের উপকারিতা
১ স্মৃতিশক্তি বাড়ে
মাথা ও মনকে সতেজ রাখতে দুপুরে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের একটা পাওয়ার ন্যাপ জরুরি। স্মৃতি-শক্তিও বাড়ে।
২ সৃষ্টিশীলতা বাড়ে
দুপুরে ‘ছোট্ট ঘুম’ খুবই উপকারি। ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের ঘুমের ফলে স্মৃতিশক্তির পাশাপাশি বাড়ে সৃষ্টিশীলতা। এতে সতেজতা আসে। দুপুরে ঘুমে মস্তিষ্কে বিশ্রাম হয় খুব ভালো, ফলে চিন্তা শক্তিও বাড়ার প্রবণতাও থাকে প্রবল। এই ঘুমে স্নায়ুর উপর চাপ কমে। মন ভালো হয়। কোনও কাজে মনোনিবেশ করতেও সুবিধা হয়।
আমরা যখন ঘুম থেকে উঠি, আমাদের মস্তিষ্কে এডেনোসিন নামে একটি রাসায়নিকের ক্ষরণ বাড়তে থাকে। আমরা যত বেশি সময় ধরে জেগে থাকি, আমাদের মস্তিষ্কে এর উপস্থিতি ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং শরীরে ক্লান্তি ভাব তৈরি হতে থাকে।
এই প্রসঙ্গে এই গবেষক গাই মেডোজ জানিয়েছেন, যখন আমরা ন্যাপ নেই তখন এডেনোসিনের ব্যাবহার কমে আসে, এটি সংরক্ষিত হয়। যার ফলে কর্মশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং আমরা সতেজ অনুভব করি, মেজাজ সতেজ হয়। কাজে ভুল করার সম্ভাবনা কমে।
৩ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থতা
ভাত-ঘুম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ভালো থাকে হৃদপিণ্ড ও কিডনির স্বাস্থ্য। আর শরীরের এই যন্ত্র গুলো ভালো থাকলে আরও অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ থাকে।
তবে ২০ থেকে ৯০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ভাত-ঘুম নেওয়া যাবে না। সেটাকে আর ভাত-ঘুম বলা যাবে না। সেক্ষেত্রে সেটা হবে গভীর ঘুম। যেটা বেশিরভাগ সময় ডেকে আনে অজানা বিপদ।