পুবের কলম প্রতিবেদক: ব্যান্ডেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের শিলান্যাস করতে এসে রেলের কাছে ‘শান্তি ও সম্প্রীতির ট্রেন’-এর জন্য অনুরোধ জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পের অধীনে গোটা দেশজুড়ে ৫৪৪টি রেল স্টেশনের শিলান্যাস করেন। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার সকালেই কলকাতা থেকে ‘স্পেশাল ট্রেন’-এ ব্যান্ডেলে যান রাজ্যপাল। সেখানেই এই বিশেষ ট্রেনের জন্য অনুরোধ জানান রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, দার্জিলিঙের রাজভবনে প্রায়ই অতিথিদের সঙ্গে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এবার কলকাতার রাজভবন থেকে দার্জিলিঙের রাজভবনে অতিথিদের নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্যপাল এই ‘শান্তি এবং সম্প্রীতি ট্রেন’ চালু করার আবেদন জানালেন রেলের কাছে। দার্জিলিঙের চা উৎসবের সময় এই বিশেষ ট্রেন চালু করার প্রস্তাব দেন রাজ্যপাল। সোমবার সকালে কলকাতা থেকে ‘স্পেশাল ট্রেন’-এ ব্যান্ডেলে যান রাজ্যপাল। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব রেলের জিএম মিলিন্দ কে দেওস্কর। তাঁর কাছেই ‘সম্প্রীতি ট্রেন’ চালু করার আবেদন জানান রাজ্যপাল।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাস অনুষ্ঠান শুরুর আগে ব্যান্ডেল স্টেশনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘প্রতি বছর দার্জিলিঙে চা উৎসব হয়। সেই উপলক্ষে সেখানে শিশু, যুবক, মহিলা খেলোয়ার থেকে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ কলকাতার রাজভবন থেকে দার্জিলিঙের রাজভবনের অতিথি হন। তাঁদের জন্য প্রতি বছর একটি বিশেষ ট্রেন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
প্রসঙ্গত, ব্যান্ডেল রেল স্টেশন আধুনিকীকরণ করার জন্য ৩০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে রেলের তরফে। এ ছাড়াও চন্দননগরে ১৮ কোটি এবং ডানকুনিতে ১৫ কোটি টাকা খরচ করে ঢেলে সাজানো হবে। পাশাপাশি ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের অধীনে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, মেচেদা, পাঁশকুড়া, হলদিয়া ও দিঘা স্টেশনের উন্নয়ন করা হবে। ঢেলে সাজানো হবে শিয়ালদহ স্টেশন এবং শিয়ালদহ ডিভিশনের দমদম জংশন, সোনারপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, নৈহাটি, কল্যাণী-সহ শহরতলির একাধিক স্টেশন। এই সব স্টেশনের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। সোমবার দেশের ৫৫৪টি স্টেশনে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ১ হাজার ৫০০টির বেশি রেল ওভারব্রিজের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করার কথা জানিয়েছে রেল। দেশের প্রায় ২ হাজার ১০০টি জায়গায় এই অনুষ্ঠান হয়। একযোগে পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মাধ্যমেও ২২টি স্টেশনের ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পের কাজের সূচনা হয়। পাশাপাশি ৪১টি রেল সেতুর শিলান্যাসও করা হয়।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল শিলান্যাস নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে শুরু হয়। রাজ্যপাল তাঁর নির্দিষ্ট সময়েই ব্যান্ডেল স্টেশনে চলে আসেন। বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন। স্থানীয় স্কুলের শিশুদের হাতে পুরষ্কারও তুলে দেন। একইসঙ্গে রাজ্যপাল রাজভবনে আমন্ত্রণ জানান পাঁচজন সাধারন মানুষ ও পাঁচজন রেল কর্মীকে। রাজ্যপাল বলেন, ‘ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে তাঁর যাত্রা শুরু হল।’ তিনি বাংলায় বলেন, ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান।’ বাংলা সব সময় ভয় শূন্য তাই ব্যান্ডেল রেল স্টেশন থেকেই উন্নয়ন ও এগিয়ে চলার বার্তা দেন।
রাজ্যপাল আরও বলেন, হিন্দী আমাদের মাতৃভাষা। হিন্দীতে বলার চেষ্টা করব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ডাবল ইঞ্জিন সরকারের জন্য বিখ্যাত। উনি দেশের উন্নতির জন্য, একতার জন্য কাজ করে চলেছেন। প্রতিদিন ৪০ লাখ যাত্রীকে বহন করে পূর্ব রেলওয়ে। প্রধানমন্ত্রী দেশের রেল ব্যবস্থাকেও উন্নত করেছেন। কলকাতা থেকে আমাদের সঙ্গে এসেছে স্কুলের শিশুরা। এরা দেশের ভবিষ্যত। এই শিশুরা ঠিক করবে ভারতের ভবিষ্যত।