নিজস্ব প্রতিবেদক: বিধানসভার দলনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্ক খুব যে একটা মধুর নয়, তা রাজ্যবাসীর অজানা নয়। গত দেড় বছরে পারতপক্ষে বাক্যালাপ হয়নি দু’জনের।
শাসকদলের নেত্রীর সঙ্গে বিরোধী দলনেতার এহেন ‘মধুর’ সম্পর্ক রাজ্য রাজনীতির চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু শুক্রবার আচমকাই সেই সম্পর্কে আচমকাই নাটকীয় মোড়। অতীতের তিক্ততা ভুলে বিরোধী দলনেতাকে চা-চক্রে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বিধানসভা ভবনে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির বর্ষীয়ান বিধায়ক অশোক লাহিড়ি, বিজেপি বিধায়ক দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা, আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন বিরোধী দলনেতা ও অগ্নিমিত্রা পাল। কথাবার্তার সময়ে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী কেমন আছেন তা জানতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদও বিজেপিকে দেওয়ার অনুরোধ জানান শুভেন্দু। পিএসি’র চেয়ারম্যান পদ পেলে বিধানসভার বাকি স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ নেওয়া হবে বলে জানান।
প্রশাসনিক বৈঠক ও সরকারি অনুষ্ঠানে বিজেপি বিধায়ক-সাংসদদের আমন্ত্রণ না জানানো নিয়েও অনুযোগ জানান বিরোধী দলনেতা। দু’তরফের বৈঠকের পরে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুভেন্দুকে চা খেতে ডেকেছিলাম।’ আর বিরোধী দলনেতা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কোনও কৌতুল নেই। মুখ্যমন্ত্রী চা খেতে ডেকেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে সৌজন্য থাকবে। তাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। তবে কী আলোচনা হয়েছে বলব না। সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা উচিত নয়।’
এ দিন বিধানসভায় সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিরোধী বিধায়কদের না থাকা নিয়ে কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিরোধী দলের বিধায়কদের দেখছি না। এলে ভালো করতেন। এর পরেই আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমস্ত বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানোর নির্দেশ দেন তিনি। চলচ্চিত্র উৎসবের সভাপতি তথা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র উৎসবে যেন আমরা-ওরা বিভাজন না করা হয়। সবাইকে ডাকতে হবে।’