দেবশ্রী মজুমদার, বগটুই: বগটুই কাণ্ডে এবার সন্দেহের তালিকায় দুটি টোটো ও একটি মোটরবাইক। বগটুইয়ের পাশেই কুমাড্ডা গ্রামে সেই দুই সন্দেহযুক্ত টোটো ও এক মটোরবাইক নিয়ে শনিবার দিনভর তদন্ত চালাল সিবিআই। সেই সঙ্গে দুই অভিযোগকারী মিহিলাল সেখ ও সেখলাল সেখকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। মিহিলাল ও সেখলালকে সঙ্গে নিয়ে ওই দুই সন্দেহভাজন টোটো ও বাইককে শনাক্ত করণের কাজ চালালেন তারা। তদন্তে উঠে আসে বেশ কিছু প্রশ্ন। জানতে চান টোটো মালিকের নাম এবং যেখানে টোটো পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা আছে, সেই বাড়ির মালিকের নাম এবং তাদের সঙ্গে টোটো মালিকের সম্পর্ক।
তদন্তের পর মৃত সাইবার সেখের বৌমা তথা মণিরুল সেখের স্ত্রী মুনতারা বিবি প্রতিবেদককে বলেন, ২১ মার্চের পরের দিনই বগটুই থেকে এই গাড়িগুলো তাদের বাড়িতে রেখে দেওয়া হয়। এই টোটো চালাতেন মিলন সেখ ও তার ছেলে রাণা সেখ।
তারা সম্পর্কে মুনতারা বিবির ভাগ্নে ও নন্দাই। অর্থাৎ তার শ্বশুর তাদের সম্পর্কে নানা। ঘটনার পর থেকেই মিলন ও রাণা সেখ পলাতক। মুনতারা বিবি বলেন, টোটোদুটি আগুনের হাত থেকে বাঁচাতেই তাদের বাড়িতে রেখে যাওয়ার কথা মিলন ও রাণা সেখ জানিয়েছিলেন। তবে টোটোদুটির মালিকের নাম জানা গেলেও, মটোর বাইকের মালিকের নাম জানা যায়নি। ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত হতে চান যে বাইরে থেকে পেট্রোল নিয়ে এসে দলবল নিয়ে পেট্রোল সংযোগে আগুন লাগানোর ঘটনার যোগসূত্র সম্পর্কে। সেই কারণেই শনিবার সিবিআই টিম বগটুইয়ের পাশের গ্রাম কুমাড্ডায় আসে। কুমাড্ডায় সেখ লাল সেখের মেয়ে সাজিনা বিবির বাড়িতে আগেই আশ্রয় নেন মিহিলাল সেখ সহ কয়েকজন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সিবিআই টিম ওই দুই টোটো ও এক মটোরবাইকের সন্ধান পায়। মিহিলাল ও সেখ লালের অভিযোগ, এই দুটি টোটো ও মটোর বাইকে করে পেট্রোল ও বোমা আনা হয়েছিল। এই দুটি টোটো সাজিনা বিবির বাড়ির কিছুটা দূরে সাইবার সেখের বাড়ি ও পাশে রাখা আছে। এদিন মিহিলাল ও সেখলাল এই গাড়িগুলোকে শনাক্ত করতে সাহায্য করেন।
অন্যদিকে যে সোনা সেখের বাড়ি থেকে আটটি দগ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায় তার পূর্ব দিকে আরবজান বেওয়া এবং উম্মেতিফতেমার বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তবে তাদের কাছ থেকে ঘটনার দিনের ভয়াবহ রাতের ঘটনা সম্পর্কে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসেনি। আরবজান বেওয়া এবং তার মেয়ে উম্মেতিফতেমা বলেন, ঘটনার দিন চারিদিকে বোমার আওয়াজ আর মানুষের চিৎকারে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অসুস্থ হয়ে পড়েন আরবজান। নিজেদের ঘরের খিল দিয়ে নিজেরাই লুকিয়ে ছিলেন।
এদিন তারপরই সিবি আই টিম সেখলাল সেখের নিজের বাড়িতে যায়। সেখানেও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। অন্যদিকে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প পান্থশ্রীতে আনারুল হোসেন ও পাঁচজন পুলিশ অফিসারকে জেরা করা হয়।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সায়ন আহমেদ এবং আই সি ত্রিদিব প্রামাণিককে অপসারিত করার পর রামপুরহাট এস ডিপিওর দায়িত্ব নেন ধীমান মিত্র এবং রামপুরহাট থানার আইসি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন দেবাশীষ চক্রবর্তীকে বলে জানা গেছে।