নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী লোকসভা ভোটে কাঁথি আসনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দাঁড় করাতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পদ্ম শিবিরের শীর্ষ এক নেতা রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কাঁথি থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়ানোর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। যদি তিনি লোকসভায় জিতে যান ও কেন্দ্রে ফের মোদি সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে শিশিরপুত্রকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রস্তাবে আপত্তি জানাননি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
কাঁথি লোকসভা আসনে গতবার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে জিতেছিলেন শিশির অধিকারী। যদিও গত বিধানসভা ভোটের আগেই তাঁর সঙ্গে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের দুরত্ব তৈরি হয়। খাতায়-কলমে তৃণমূলের সাংসদ হলেও বিধানসভা ভোটের আগে কাঁথিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। দলের কাজকর্ম থেকে দূরে থাকলেও বিজেপির একাধিক নেতার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে শিশির। ফলে জল্পনা শুরু হয়েছিল, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে নাম লিখিয়ে পদ্ম টিকিটেই কাঁথিতে লড়বেন বর্ষীয়ান নেতা।
সূত্রের খবর, ৮২ বছর পেরনো শিশির অধিকারী দলে যোগ দিলেও তাঁকে প্রার্থী করতে চাইছে না বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। গত বিধানসভা ভোটে নিয়ম ভেঙ্গে বাংলায় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও কেরলে মেট্রোম্যান হিসেবে পরিচিত শ্রীধরনকে প্রার্থী করে মুখ পোড়াতে হয়েছে পদ্ম শিবিরের। অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা ভেবেছিলেন, দুজনেই জিতে যাবেন। কিন্তু তাঁদের ফর্মূলা ডাহা ফেল করেছে। দুই প্রবীণই গোহারা হেরেছেন। ফলে পঁচাত্তর বছরের উপরে কাউকে প্রার্থী না করার পুরনো সিদ্ধান্তেই ফিরেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
শুভেন্দু অধিকারী দীর্ঘ সাত বছর লোকসভার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তমলুক আসন থেকে জিতেছিলেন। ফলে সংসদের নিম্নকক্ষ তাঁর কাছে নতুন কিছু নয়। তবে এবার তমলুক থেকে নয়, একদা অধিকারীদের গড় হিসেবে পরিচিত কাঁথি থেকেই শিশিরপুত্রকে দাঁড় করাতে চাইছেন জেপি নাড্ডা-অমিত শাহরা।
রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, কাঁথি লোকসভা আসনকে পাখির চোখ করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যে কারণে সম্প্রতি রাজ্য সফরে এসে কাঁথিতে গিয়ে সভাও করেছেন পদ্ম শিবিরের প্রধান সেনাপতি জে পি নাড্ডা। যদিও ওই সভায় হাজির ছিলেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতির কর্মসূচিতে শুভেন্দুর গরহাজিরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা না থাকায় নাড্ডার সভা কার্যত ফাঁকা ছিল। তার পরেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। লোকসভা ভোটে শুভেন্দুকে দাঁড় করিয়ে তাঁকে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় আটকে রাখায় দলের ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন না বিজেপি শীর্ষ নেতারা। ।