পারিজাত মোল্লা :মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে অশান্তির ঘটনায় সিট গঠনের নির্দেশ দিলেন । রাজ্য পুলিশের ডিজিকে সিট গঠনের নির্দেশ দিল সিঙ্গেল বেঞ্চ।চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ।
বিজেপি এই সাংসদের অভিযোগের ভিত্তিতেই নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। গেরুয়া সাংসদের অভিযোগ কে এফআইআর হিসেবে মামলা গ্রহণ করতে হবে পুলিশ কে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে যাঁদের, তাঁদের জামিন দেওয়ার নির্দেশও দিল হাইকোর্ট।এদিন মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে অশান্তির ঘটনায় সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হল। এই মামলার শুনানি চলাকালীন সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, -‘ শান্তনুর দায়ের করা মামলায় ডিজিকে সিট গঠন করতে হবে। এফআইআর হিসাবে গ্রহণ করতে হবে মামলাকারীর অভিযোগ। এডিজি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে। যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, জামিনে ছেড়ে দিতে হবে তাঁদের’। ওই দিন মন্দির এবং চাঁদপাড়া হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তদন্ত কতদূর এগোল? তা আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে তার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১১ জুন নবজোয়ার জনসংযোগ কর্মসূচি ছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের । ত ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতেও যান তিনি। তিনি পৌঁছনোর আগে অশান্তি মাথাচাড়া দেয় ঠাকুরনগরে। তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে । মূল মন্দিরে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মূল মন্দিরে ঢুকতে না পেরে পাশের মন্দিরে যান অভিষেক ।ওই দিন অভিষেক পৌঁছনোর আগেই দফায় দফায় অশান্তি ছড়ায়। অভিষেকের মতুয়াবাড়িতে পুজো দিতে আসা নিয়েও আপত্তি তোলেন শান্তনু। আগে থেকে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন। রথযাত্রা প্রস্তুতিতে প্রচুর সমর্থক এসেছিলেন। কিন্তু প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনার দিন সকালের দিকে ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে পুলিশকেও সরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছিল শান্তনুকে। তার পর দুই পক্ষের মধ্যে হাতহাতি শুরু হয়। অভিষেকের বিরুদ্ধে পড়ে পোস্টার, ওঠে স্লোগানও।অভিষেকের সেই সফর ঘিরে সংবাদমাধ্যমেও মুখ খুলেছিলেন শান্তনু। অভিষেক এবং তাঁর সমর্থকরা ঢুকে পড়ায় মন্দির অপবিত্র হয়েছে বলে দাবি করেন শান্তনু । প্ররোচনা দিয়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগও করেন তিনি। মন্দিরের ফটক বন্ধ করল হাতাহাতি তে কয়েকজন জখম হয়।
পুলিশ এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন কে গ্রেপ্তার করে থাকে । পুলিশের একাধারে অতি সক্রিয়তা ও অপরদিকে নিস্ক্রিয়তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন শান্তনু। মঙ্গলবার তার শুনানিতেই সিট গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।আগামী ১৮ জুলাই পুলিশ কে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ।