পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২১ শে জুলাইয়ের আগে কর্মীদের বার্তা দিতে আজ উত্তরবঙ্গে ধূপগুড়িতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা শুরু সময় থেকেই অভিষেক বলেন, আমি আজ এখানে ভোট চাইতে আসিনি। বিপদে আপদে তৃণমূল আপনার পাশে আছে। মানুষের আদেশ তৃণমূল মাথা পেতে নেয়। আমি আজ এসেছি উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে। বিধানসভায় ভোটে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, ধূপগুড়িতে ভালো ফল হয়নি। নিশ্চই আমাদের কোনও খামতি ছিল, তাই ভালো ফল হয়নি। স্বীকার করতে আমার কোনও দ্বিধা নেই। অভিষেক বলেন, আমি আজ এসেছি উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে। যারা তৃণমূলের থেকে অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। গণতন্ত্রে গণদেবতা মানুষ, যা বলবেন তাই শিরোধার্য।
মঞ্চ থেকে অভিষেক নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, যতদিন মমতা থাকবেন, ততদিন পৃথক জেলা করার সাহস কেউ দেখাতে পারবে না। মমতা থাকলে বাংলা ভাগ হবে না। অভিষেক সোচ্চার হয়ে বলেন, আজ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ বলে কিছু নেই। শুধুই আছে পশ্চিমবঙ্গ। যারা বিভাজন চায়, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। চক্রান্ত করে বাংলা ভাগের চেষ্টা করলে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব। আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। আমার কাছে ডায়মন্ডহারবার যা জলপাইগুড়িও তাই। অভিষেক আরও জানান, ব্যারাকপুর, ঝাড়গ্রাম, হলদিয়া, ডায়মন্ড হারবারে সভা করলে কেউই দক্ষিণবঙ্গে সভা বলেন না৷ তাহলে কেন উত্তরবঙ্গ বলা হবে? “উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ বলে কিছু হয় না। এটা বঙ্গ। এটা বাংলা। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ আবার কী?
অভিষেক এদিন বলেন, মঞ্চ থেকে একটি হেল্পলাইন নাম্বার (৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭) দিয়ে বলেন কারুর কোনও অসুবিধা হলে, এই নাম্বারে জানাতে পারবেন। সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত এই নাম্বারে ফোন করে জানানো যাবে। আগে এই পরিষেবা ডায়মন্ড হারবারের মানুষের জন্য ছিল, কিন্ত এবার থেকে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি-এর মানুষেরাও এই সুবিধা পাবে। কথা দিচ্ছি অভিযোগ আসলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন দলের দিকে কড়া বার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, কোনও দাদা-দিদির পা ধরে কিছু হবে না। ২১ শে জুলাই সমাবেশে যারা আসবেন, নিজের কাজের রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। কে কটা বুথে গিয়েছেন তার প্রমাণ আনতে হবে। অভিষেক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি এই বয়সে সব জায়গায় যেতে পারেন, তাহলে অন্যরা কেন পারবে না। জেলার দায়িত্ব মানে কেউকেটা হয়ে গেছে, এমন কিছু নয়। গায়ের জোর নয়, সকলকে মাথা নত করে কাজ করতে হবে।
মঞ্চ থেকে বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, তৃণমূল যা বলে তা করে দেখায়। লক্ষ্মীর ভান্ডার করেছে। আর কেন্দ্র সরকার কি করেছে। ৪০০ টাকার গ্যাস ১১০০ টাকা হয়ে গেছে। বিজেপি বলেছে ২ কোটি চাকরি। কোথায় হয়েছে? ১০০ টাকার সরষের তেল এখন ২০০ টাকা। কেরোসিন তেলের দাম বেড়েছে। কোথায় অচ্ছে দিন? ভোটের হারের শোধ তুলছে বিজেপি। একজন রেশন দিচ্ছে, আর একজন খালি ভাষণ দিচ্ছে। এদিন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বলেন, উন্নয়নের নিরিখে লড়াই হোক।
কেন্দ্র সরকারকে তুলোধনা তৃণমূলের এই যুবনেতা বলেন, একটা স্কুল, হাসপাতাল হলেই নিজের নামে করছে। মুখ্যমন্ত্রীও নিজের নামে প্রকল্প করতে পারেন, মুখ্যমন্ত্রী বাংলার নামে প্রকল্প করেন।
ভারতে বিজেপি থাকলে শ্রীলঙ্কা আর আফগানিস্থানের মতো হবে।
সভা শেষে অভিষেক বলেন, আমার কোনও কথা আপনাদের খারাপ লাগলে আমাকে বলবেন।
এদিন সভা থেকেই অভিষেক সকলের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ দু বছর পর আবার ২১ শে জুলাই মহা সমাবেশ হচ্ছে। সব থেকে বেশি জমায়েত যেন জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি থেকে হয়, আমি এটাই আশা রাখব।