পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ২০২০ তে প্রথম শুরু হয় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ আর এই Pandemic Situation। যার জেরে আমাদের জীবনযাত্রা পুরোপুরিভাবে স্তব্ধ হয়ে যায়। চারিদিকে এক অচলাবস্থা তৈরি হয়। চলমান পৃথিবী যেন হঠাৎ করেই তার গতি হারিয়ে ফেলে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ আপনজন হারায়। কাজ হারিয়ে একাধিক মানুষ আর্থিক সমস্যায় পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা কারুর অজানা নয়।
এই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ায় ‘বন্ধু বোহেমিয়ান’ গ্রুপের সদস্যরা। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই নিজেদের সামান্য পুঁজিকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের পথে নামে তাঁরা।
সদস্যদের কথায়, ২০২১ এসেও গেলেও এখনও আমরা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। এখনও রয়েছে অচলাবস্থা। তবুও সব কিছুর পরেও আমাদের প্রত্যেককে ঘুরে দাঁড়াতেই হয়, কারণ এটাই জীবন। না হলে জীবনটাই থেমে যাবে। এই কথা মাথায় রেখেই ‘বন্ধু চল বোহেমিয়ানের’ সদস্য /সদস্যারা নিজেদের সাধ্যতমত চেষ্টা করে চলেছে।
অ্যাডমিন পিয়ালী নস্করের কথায়, গত ১৭ অক্টোবর রবিবার আমরা সকলে মিলে যাই ঠাকুরপুকুর সালতিঘাটায় Voice Of World (Blind School) এ। সেখানে প্রায় ২০০ জন দৃষ্টিহীন ভাই ও বোনেদের প্রাতরাশ ও দুপুরের খাবার সহ আনুষঙ্গিক কিছু জিনিস দিয়ে আসি। তাদের মুখের হাসিটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সারাটা দিন খুব আনন্দের সঙ্গে সকলের সঙ্গে হৈ হৈ করে কাটে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলি যে যেমন পারে গান ও কবিতা পরিবেশন করে।
পিয়ালীদেবী জানান, বন্ধু চল বোহেমিয়ান তাদের পথ চলা শুরু করে দু বছর আগে। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে কলকাতা সহ শহরতলী ও জেলাতেও কাজ করে চলেছে তারা।
কাজের মধ্যে রয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা, অনাথ আশ্রমের ভাই বোনেদের হাতে পছন্দের জিনিস সহ শিক্ষার সামগ্রী তুলে দেওয়া। এছাড়া নতুন জামা-কাপড় বিতরণ করা। আমাদের লক্ষ্য সকলের মুখের হাসি।
এছাড়াও ‘বন্ধু চল বোহেমিয়ান গ্রুপের’ পক্ষ থেকে এর আগে নদিয়ার মাঝদিয়ায় একটি ইটভাটার শিশুদের শিক্ষার সামগ্রী সহ জামা কাপড় দেওয়া হয়েছে। নামখানায় ইয়াসে দুর্গত ২৫০ জন মানুষের মুখে খাওয়ার তুলে দেওয়া হয়েছে। মধ্যগ্রামের একটি মহিলা আশ্রমেও খাওয়ার এবং নিত্যও প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস দিয়ে তাদের সাহায্য করা হয়েছে।
বন্ধু চল বোহেমিয়ান গ্রুপের অ্যাডমিন পিয়ালী নস্কর জানিয়েছেন, আমাদের গ্রুপে রয়েছে মোট ১৩ জন সদস্য। এরা হলেন দ্রিমিতা সরকার, অমিতাভ দাশগুপ্ত, সঙ্গীতা দাস, কুহেলী নস্কর, শুভজিৎ নস্কর, পায়েল হালদার, শ্রেষ্ঠা দাস, দীপাঞ্জন সরকার, বিনোদ গোসাই, আকাশ সরদার, অনিতা প্রসাদ, অমিতাভ দে ও সায়ন ত্রিপাঠী।
সকল সদস্যদের কথায়, আমরা সব সময় মানুষের পাশে আছি, ছিলাম আর থাকব।