পুবের কলম প্রতিবেদক: স্বাস্থ্যসাথী-কে কেন্দ্র করে অভিযোগের যত কাণ্ড বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে! এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন এমনই জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথীর নিয়ে অভিযোগ আগের তুলনায় এখন অনেক কমে গিয়েছে।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও কোনও ক্ষেত্রে যেমন বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা, নার্সিংহোম থেকে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তেমনই কোনও ক্ষেত্রে আবার বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা, নার্সিংহোম থেকে টাকা চাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা, নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। তবে, এ সব ক্ষেত্রে সরকারি তরফে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
২৫ জানুয়ারি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনও জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ আগের তুলনায় এখন অনেক কমে গিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে স্বাস্থ্য কমিশনের। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ স্তরের এক আধিকারিক এ দিন এমনই জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে যাতে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় তার জন্য প্রচেষ্টা জারি রয়েছে।
তবে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বিষয়টি নিয়ে সরকারি হাসপাতালের ছবি অন্য রকম। যেমন, আড়াই বছরের সন্তানকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার বাসিন্দা লালন শেখ এসেছেন নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। তাঁর সন্তানকে এই হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বহরমপুরের হাসপাতাল থেকে। আড়াই বছরের এই শিশুর পেটে অস্ত্রোপচার করা হবে। লালন শেখ বলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে তবে এই দুই হাসপাতালের কোথাও এই কার্ডের প্রয়োজন পড়েনি।
‘ গড়িয়ার বাসিন্দা শ্যামল মণ্ডল নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এসেছেন তাঁর ভাগ্নির জন্য। শ্যামল মণ্ডলের বছর ৪০-এর ভাগ্নি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বাসিন্দা। তাঁর টিউমার অস্ত্রোপচার করা হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বিষয়টি নিয়ে শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘ভাগ্নিকে এই হাসপাতালে ভর্তির সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রয়োজন পড়েনি। স্ক্যান করার সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখাতে হয়েছে। তবে, এখানে কোথাও কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে।’
স্বাস্থ্যসাথী, তা হলে অভিযোগের যত কাণ্ড বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে! কারণ, আর এক সরকারি হাসপাতালেও দেখা গেল অন্য ছবি। কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই হাসপাতালে এসেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব আবুল বাশার মোল্লা। তাঁর কথায়, ‘চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রয়োজন পড়েনি।’ ঘুটিয়ারিশরিফের বাসিন্দা বছর ৬০-এর কমলা সর্দারের অস্ত্রোপচার হবে এই হাসপাতালে। তাঁর জামাই শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। তবে এখানে চিকিৎসার জন্য এই কার্ডের কোনও প্রয়োজন পড়েনি।’