পুবের কলম প্রতিবেদকঃ রবিবার রাজ্যের ১০৮ টি পুরসভায় নির্বাচন।এদিকে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের তরফে সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যে নাগাদ সমস্ত বুথে ভোট কর্মী ও পুলিশ কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি বুথে কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে ভোটের প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে সমস্ত ভোট কেন্দ্রের জন্য ইভিএম মেশিন সহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণও শুরু হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে– নির্বাচনে ১০ জন আইএএস অফিসারকে সিনিয়র বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ১০৮টি পুরোভোটের নিরাপত্তায় ৪৪ হাজার পুলিশকর্মী ও আধিকারিক মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও ৪ হাজার পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করা হতে পারে। নির্বাচনে কাছে এসটিএফ– ইএফআর– কমান্ডো ওর্ যাফকেও নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে পুরভোটকে কেন্দ্র করে শনিবার জেলায় জেলায় নাকা চেকিং শুরু হয়েছে। রাত পোহালেই পুরসভা নির্বাচন। আর এই পুর-নির্বাচনের ঠিক আগের দিন অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পুলিস নাকা চেকিং শুরু করেছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। পুরভোট উপলক্ষে রাজ্য পুলিসের পাশাপাশি রয়েছে কলকাতা পুলিসের কর্মীরাও।
এই পুরসভা নির্বাচন ঘিরে শাসক-বিরোধী শিবিরেরও প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে শুধু তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ নয়। ১০৮ টি পুরসভার নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল অrদরেও কম জলঘোলা হয়নি। প্রথমে দুইবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে তৃণমূলের অrদরে বিক্ষোভ বাধে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর লাগাতার ক্ষোভের মুখে পড়েছে শাসকদল। পথে নেমে বিক্ষোভও দেখান বিক্ষুব্ধরা। প্রার্থী তালিকাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ঘরের আগুন নেমে এসেছিল রাস্তায়। দলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতা। নির্দল প্রার্থীদের উপর মহল থেকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল মনোয়ন প্রত্যাহার করার জন্য। কেউ কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। কেউ আবার মনোনয়ম প্রত্যাহার না করায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তৃণমূলের অন্দরের এই পরিস্থিতিতে ১০৮ টি বিধানসভায় নির্বাচন আজ। ইতিমধ্যে নির্বাচনের দুইদিন আগেই জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি বিরোধীদের ‘নাটক’ থেকে বেঁচে চলার সতর্কবার্তা দেওয়া হল।
বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১৩ টি ওয়ার্ডে ভোট। শনিবার সকাল থেকেই শহরের বাইরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিসের পক্ষ থেকে শুরু হয় নাকা চেকিং। বাইক থেকে ছোট গাড়ি– সমস্ত কিছুতেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে কোচবিহার জেলার মধ্যে দিনহাটা পুরসভায় ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ৫ টি পুরসভা কোচবিহার– মেখলিগঞ্জ– মাথাভাঙা– হলদিবাড়ি ও তুফানগঞ্জে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আজ। তার আগেই চলছে সমস্ত ডিসিআরসি সেন্টারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিপর্ব। ২০ টি ওয়ার্ডের জন্য ডিসিআরসি সেন্টার করা হয়েছে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে।
একইভাবে হাবড়া পুরসভা এবং গোবরডাঙা পুরসভায় ভোট উপলক্ষে হাবড়া চৈতন্য কলেজে তৈরি করা হয়েছে ডিসিআরসি সেন্টার। এখান থেকেই ভোটের ইভিএম এবং ভোট কর্মী সহ পুলিস কর্মীরা যান ভোট কেন্দ্রের দিকে।
খড়্গপুর পুরসভাতেও রাত পোহালে নির্বাচন। আর তার আগের দিনই ইভিএম ডিস্ট্রিবিউশন কেন্দ্রে সাজোসাজো রব। সকাল থেকে ব্যস্ত সকলেই। খড়্গপুরের ইrদা কলেজে হয়েছে ডিসিআরসি সেন্টার।
অন্যদিকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার। জেলা পুলিস সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান– নির্বাচনের দিন জেলার রাজপুর-সোনারপুর– বারুইপুর এবং জয়নগর এই পুরসভাগুলিতে প্রতিটি বুথে থাকবে কড়া পুলিসি প্রহরা। বারুইপুর জেলার পুলিস কর্মীদেরও লাগানো হচ্ছে নির্বাচনের কাজে। বারুইপুর পুলিস জেলার বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং পয়েন্ট থাকছে। থাকছে পুলিস পেট্রোলিংও। এছাড়াও পুরসভার প্রতিটি বুথে কড়া নজরদারি চলছে। অন্যদিকে সমস্ত বুথে বুথে শুরু হয়েছে রুটমার্চ। সব মিলিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুরসভা নির্বাচনের অঞ্চলগুলিতে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে।