আবদুল ওদুদ : আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বাংলায় যার পোশাকি নাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর সকলে সংক্ষেপে বলেন ‘এআই’। বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নিয়ে বিপুল আলোচনা হচ্ছে। চলছে বিতর্কও।
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন কর্পোরেট হাউস থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম কিংবা অন্যান্য অফিসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তাতেই অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন আগামিতে মানুষ কাজ হারাবে না তো? কেননা বিভিন্ন অফিসে ‘এআই’ দিয়ে কাজ করালে অনেকটাই খরচ সাশ্রয় হবে। যার কারণে বিভিন্ন সংস্থা এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের উপর নির্ভর হতে চলেছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবাংলা। কলকাতায় কোনও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সংবাদ পরিবেশন শুরু করেনি। তবে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গবেষণার সুযোগ পেলেন আলিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সেক নাসিম। দিন কয়েক আগে জার্মানি পৌঁছে গিয়েছেন। আগামী তিন বছর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা করবেন। সেক নাসিম জার্মানির ফ্রাইবাগ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিতে ম্যাথমেটিক্স ফর ডেটা এন্ড রিসোর্স সায়েন্স বা মেশিন লার্নিং ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর উপর গবেষণা করবেন।
মেধাবি এই তরুণের তিন বছরের সমস্ত খরচ বহন করবে জার্মানির ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি।
সেক নাসিম কৃষক পরিবারের সন্তান। তাঁর আব্বা সেক আজমল কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। কৃষিকাজ করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছেন। মা জরিনা বিবি গৃহবধূ। গ্রামের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুর থানার তনুয়াগ্রামে। প্রাথমিক পড়াশোনা তনুয়া স্বামীবিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরে। স্নাতক হন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এর পরই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি হাসিল করেন কলকাতা আলিয়া বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে। চাকরি না পেলেও পরিবাররে হাল ধরতে পতাকা শিল্পগোষ্ঠী পরিচালিত জিডি অ্যাকাডেমিতে অঙ্কের টিচার হিসেবে যোগ দেন।
ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান হল এখান থেকেই তাঁর বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন পুরণ হয় বলে পুবের কলমকে জানান সেক নাসিম। তিনি বলেন, জিডি অ্যাকাডেমিতে না এলে আইএএস নুরুল হকের সঙ্গে আলাপ হত না। আর তাঁর বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যেতো। নুরুল হকের ছায়া সঙ্গী হওয়ার পরই তাঁর নির্দেশনা এবং অনুপ্রেরণায় জার্মানি যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। জার্মানির ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পরীক্ষা সমস্ত কাজই সম্পন্ন হয়েছে নুরুল হকের হাত ধরে বলে তিনি জানান। সেক নাসিমের এক ভাই বর্তমানে চীনে চাকরিরত। আগামীতে সেও জার্মানির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা প্রসঙ্গে আইএএস নুরুল হক বলেন, প্রত্যন্ত মেধাবি ছাত্র সেক নাসিম। তাঁর গবেষণা সফল হবে। আগামীতে তাঁর হাত ধরে বাংলা আরও এক বিজ্ঞানি পাবে। তাঁকে নিয়ে বাংলার মানুষের অনেক স্বপ্ন। নাসিমের হাত ধরে বাংলা আরও এগিয়ে যাবে।
তবে দারিদ্রতা কোনও কিছুকেই আটকে রাখতে পারে না মেধা থাকলে তা বিকশিত হবে। তিনি আরও বলেন, নাসিম কখনও ভাবেনি সে বিদেশে যাবে। কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেও যে বিজ্ঞানি হওয়া যায় সেটাই প্রমাণ করতে জার্মানি যাত্রা তাঁর। তাঁর এই সাফল্যে গোটা জিডি পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত।