গান্ধিনগর: সম্প্রতি গুজরাতে তথাকথিত ‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী আইন রূপায়ণ করেছে। যা নিয়ে গুজরাত হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছিল। এই মামলার শুনানিতে বিজয় রুপানির বিজেপি সরকার বড় ধাক্কা খেল। আদালত ওই আইনের কয়েকটি ধারা স্থগিত করে দিয়েছে। পছন্দের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ঘটাচ্ছে এই আইন, মন্তব্য হাইকোর্টের৷ ধর্মান্তরবিরোধী আইনের ছ’টি ধারা নিয়ে অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট। যার মধ্যে একটি ধারা হল কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে তাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এছাড়া প্রাপ্তবযস্কদের ক্ষেত্রে বিনা সম্মতিতে এবং প্রলোভন বা প্রতারণা ছাড়া কোনও বিয়ে যদি দু’জনের সম্মতিতে হয় তবে সেই বিয়েকে বেআইনি বলা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে গুজরাত হাইকোর্ট। এছাড়াও আদালত এই আইনের ৩, ৪, ৫ এবং ৬ নন্বর ধারার সংশোধনী বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, তথাকথিত লাভ জিহাদ বিরোধী আইন নিয়ে বিশাল ধাক্কা খেল গুজরাত সরকার। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণবের বেঞ্চ জানিয়েছে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক যদি নিজেদের সম্মতিতে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন, যেখানে কোনও ধর্মান্তরকরণের প্রশ্নই নেই, সেখানে এই আইন কার্যকর হবে না। নাগরিকদের ব্যক্তিগত পছন্দের স্বাধীনতা দিয়েছে সংবিধান৷ তারা আরও বলেন, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক যদি আলাদা ধর্মের হন ও তারা যদি কোনও প্রলোভন বা প্রতারণার শিকার না হয়ে বিয়ে করতে সম্মত হন, সে ক্ষেত্রেও এই আইন কার্যকর করা যাবে না। গুজরাতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আন্তঃধর্মীয় বিয়ে মানেই তা ধর্মান্তরকরণের জন্য, বা প্রলোভন দেখিয়ে বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে, এ কথা মেনে নেওয়া যায় না৷
লাভ জিহাদ আইন ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী ও তা নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে হরণ করছে, এই অভিযোগ তুলে মামলা করেছিল জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ ও মুহাহিদ নাফিস। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই অন্তর্বর্তী রায় দেয় কোর্ট। শুনানিতে বলা হয়, এই আইন ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত পছন্দ, ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের পরিপন্থী। শুধু তা-ই নয়, এটি অকারণ বৈষম্য সৃষ্টিকে সহযোগিতা করছে। প্রসঙ্গত, গুজরাতের বাইরেও মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ এই ধরনের আইন পাশ করিয়েছে। মূলত, বিজেপি-শাসনাধীন রাজ্যগুলিই তথাকথিত লাভ জিহাদ বন্ধ করার জন্য এই আইন এনেছে৷