পুবের কলম প্রতিবেদক: শুক্রবার থেকে নতুন সময়ে শুরু হল মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ বছর প্রশ্নফাঁস রুখতে ‘বিশেষ কোড’, চিহ্নিত করা হয়েছে। কোনওভাবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাইরে এলে পরীক্ষার্থীদের সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এত সতর্কতা সত্বেও প্রশ্ন ছবি তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এই ঘটনায় দুই পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্য শিক্ষ পর্ষদ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ ßুñলের প্রায় ৯ লক্ষ ২৩ হাজার ছাত্রছাত্রী জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসেছে। গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী বাড়লেও নজরদারির সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কমানো হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা। এবছর ২ হাজার ৬৭৫টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছে
বিগত কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে পর্ষদকে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পরীক্ষার স্বচ্ছতা, সর্বোতভাবে মধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেওয়ার ক্ষেত্রে এবার প্রথম থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে পর্ষদ।
প্রশ্নপত্র রুখতে এবার প্রশ্নপত্রে ‘ম্যাজিক নম্বর’ বা ইউনিক আইডির ব্যবহার করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রের প্রতিটি পাতায় ক্রমিক নম্বরের কোড লুকনো রাখা হয়েছে। কোনও পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি তুললে সেই ছবি দেখে বোঝা যাবে কে ছবিটি তুলেছে। আর তা ধরা পড়লেই ওই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা এই বছরের জন্য পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে। পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের গোটা বিষয়টি বুঝিয়ে বলার জন্য পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এছাড়াও পরীক্ষার্থীরা যাতে মোবাইল এবং নিষিদ্ধ কোনও গ্যাজেট নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে না পারে তার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়েছে পর্ষদ।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সতর্কতা সত্বেও মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরতে দেখা গেল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপের সেই প্রশ্নপত্র দেখা যায়। ইতিমধ্যেই ২ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এদিন পর্ষদ জানিয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন উল্টাডাঙার এক সেন্টারে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধরবাগান সারদা প্রসাদ ইনস্টিটিউট অব গার্লস স্কুলে এক পরীক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হলে আংশিক অচৈতন্য অবস্থায় তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুক্রবার পরীক্ষার দিন সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। স্কুলগুলিতে যাতে পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারে সেই ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। স্কুলগুলির নিরাপত্তা পরিস্থিতি এদিন খতিয়ে দেখেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। পরীক্ষার্থীদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেন তিনি।’
পশ্চিম মেদিনীপুরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে হাতি উপদ্রুত এলাকাগুলিতে। পরীক্ষার্থীদের এসকর্ট করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও পর্ষদ জানিয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত রকমের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমস্ত কেন্দ্রেই একটি করে প্যারামেডিক্যাল টিমও রাখা হয়েছে।