পুবের কলম প্রতিবেদকঃ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাসে কয়েকজন পড়ুয়াকে র্যাগিং করার ঘটনায় অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত পড়ুয়াদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল বিশেষ কমিটি।
কমিটির অন্যতম এক অধ্যাপক বলেন, দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছে। তাদের কাউন্সেলিং করা হয়েছে। পড়ুয়ারা থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। দুই পক্ষের সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছে কমিটি। পাশাপাশি এফআইআর তুলে নিতে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। দুই পক্ষই ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য পড়ুয়ারা কমিটির সদস্যদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ইউজিসি’র অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি। এই কমিটি র্যাগিংয়ের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখছে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আলিয়ার পার্ক ক্যাম্পাসে ছাত্রদের দুই দলের মধ্যে বচসা ও মারধর হয়। এই ঘটনায় ভূগোল বিভাগের কয়েকজন আহত হয়। এই নিয়ে দুই পক্ষকে ডেকেছে কমিটি।
এমনকী মেইন গেট সংলগ্ন যে অ্যামিনিটি সেন্টার রয়েছে যেখানে যে সমস্ত পড়ুয়া জবরদ’ল করে রেখেছে তাদের অ্যামিনিটি সেন্টার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ কমিটি। এদিকে অ্যামিটিনিট সেন্টারে থাকা পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে দুস্থ পরিবারের। তাঁদের কোনও হস্টেলের ব্যবস্থা নেই। তাঁদের যাতে হস্টেলের ব্যবস্থা
করা হয়, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখার জন্য অ্যামিনিটি সেন্টারে থাকা পড়ুয়ারা অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে দুই দল পড়ুয়ার মারপিটের ঘটনায় অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পড়ুয়াদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ কমিটি।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ টাউন ক্যাম্পাসে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষে পাঠরত এক ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী স্নাতকোত্তরে পাঠরত বেশ কিছু সিনিয়র পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়।
আলিয়ার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের এক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি’কে ই-মেল ও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর কাছে লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগকারীর বক্তব্য, সে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের বৈধ আবাসিক ছাত্র। গত রবিবার রাত ১১টা নাগাদ একজন তাকে ফোন করে জানতে চায় যে সে কোথায়। ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের বিএড-এর ছাত্র বলে পরিচয় দেয়।
অভিযোগকারীর বক্তব্য ছিল, ‘ফোন আসার সময় আমি নিউ টাউন ক্যাম্পাসের হস্টেলের সাত নম্বর ফ্লোরে ছিলাম। সে কথা ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তিকে জানাই। কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে জোর করে একটি রুমের ভিতর ঢুকিয়ে আলো বন্ধ করে দেয়। জুনিয়ার ছাত্র হয়ে ‘ম্যানার’ জানি না, সিনিয়র হলেও তাদের কেন চিনতে পারি না। এইসব কথা বলে ৩০ মিনিট ধরে শারীরিকভাবে হেনস্থা করতে থাকে। আমাকে যথেচ্ছ কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়।’
অভিযোগকারী আরও জানিয়েছিল, স্নাতকোত্তর স্তরের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের বাংলা ফাইনাল ইয়ারের সহ প্রায় ১৫-২০ জন এই ঘটনায় যুক্ত ছিল। এই নিয়ে নিউটাউন থানা এবং আলিয়া কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানায় পড়ুয়ারা।