পুবের কলম প্রতিবেদকঃ বহু জাতিক সংস্থায় চাকরি ও গবেষণায় নজির তৈরি করছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট অফিসার জাকির হোসেন বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৬০টি সংস্থা ক্যাম্পাসিং করিয়েছে। এখনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে টিসিএস, সাসকেন, এএমডি, নাগারো, উৎকর্ষ ইন্ডিয়া পিনাকেল, হিন্দুস্থান কনস্ট্রাকশন প্রভৃতি। এর মধ্যে চলতি বছরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টিসিএস-এ ১১ জন চাকরি পেয়েছেন।
আলিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে জার্মানির এক ব্যাঙ্কে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার পদে বছরে ৫০ লক্ষ টাকার চাকরি পেলেন আম্বারীন আজম। এদিন আম্বারীন পুবের কলমকে বলেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের জন্য মেডিক্যাল বায়োটেক নিয়ে গবেষণা করেছি। ‘আলোর বেগের মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যানসার সহজে চিহ্নিত সম্ভব হবে, সেই গবেষণা হয়েছে। তাঁর মতে, ক্যানসার রোগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিহ্নিত করা গেলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহজ হয়।
এই গবেষণা ক্যানসার চিকিৎসায় কাজে লাগবে। আম্বারীন আজমের কথায়, মেডিক্যালের বিষয়ে গবেষণা হলেও, জার্মানিতে এক ব্যাঙ্কে চাকরি গ্রহণ করেছি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং হিসেবে। এই চাকরির জন্য আমাকে জার্মানিতে চলে যেতে হবে। চাকরি গ্রহণের পর সুযোগ অনুসারে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণেরও ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের পড়ুয়া গবেষণার জন্য সুযোগ পেলেন আম্বারীন আজমের বোন ইফাত আজম। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ানগাম ইউনিভারসিটি ইফাত আজমকে মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে গবেষণার জন্য মনোনীত করেছে। ইফাত আজম বলেন, এতে খুশি গবেষণায় সফল হয়ে পোস্ট ডক্টরেট, করার ইচ্ছা রয়েছে।
আম্বারীন আজম এবং ইফাত আজমের আব্বা রেলের অফিসার। আব্বা কর্মসূত্রে আসানসোলে থাকলেও তাঁদের বাড়ি বিহারের পাটনা সংলগ্ন এলাকায়। তাঁদের এই সাফল্যে খুশি বিভাগীয় অধ্যাপকরা। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন ব্যবস্থারও প্রশংসা করেন তাঁরা। এদিকে বিজনেস ডেভালাপমেন্ট ট্রেনি হিসেবে এক বহু জাতিক সংস্থায় নিযুক্ত হয়েছেন আমান কুমার।
পড়ুয়াদের এই সাফল্যের বিষয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আবু তাহের কমরুদ্দিন বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা ভালো চাকরি পাচ্ছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব, শিক্ষকদের গর্ব। আমরা চেষ্টা করছি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আরও ভালো ফল করে উচ্চ শিক্ষা সহ ভালো চাকরি পেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, গবেষকদের সার্বিক উন্নতির ফলে ভালো হল করছে। আগামীতে আরও বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পায়, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. নুরুস সালাম বলেন, ছাত্রছাত্রীদের এই সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল হচ্ছে। প্রতিটি বিভাগের পড়ুয়াদের নিয়ে প্রথম বর্ষ থেকেই স্কীল ডেভাল্যাপমেন্টের ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এতে পড়ুয়াদের বিশেষ সুবিধা হয়। আগামীতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করবে বলে তাঁদের আশা।