পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যের মুকুটে আবারও সেরার স্বীকৃতি। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের পড়াশোনার জন্য রের্কড সংখ্যাক স্কলারশিপ প্রদান করে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ঐক্যশ্রী প্রকল্প পেতে চলেছে ‘গোল্ড স্কচ’ অ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়াও এবার ‘স্কচ’ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে রাজ্যের বন দফতর। এবার ভালো কাজের জন্য প্লাটিনাম স্কচ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বন দফতর।
বাঁকুড়া জেলা ‘অপারেশন পুষ্টি’র জন্য পৃথক ক্যাটাগরিতে জিতেছে স্কচ অ্যাওয়ার্ড। সরকার পরিচালনায় দক্ষতার জন্য বিভিন্ন বিভাগে রাজ্যগুলিকে ‘স্কচ’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এর আগে একাধিক ক্ষেত্রে স্কচ সম্মান জিতেছে বাংলা। অতীতেও কখনও পরিবহণ দফতর, কখনও স্বাস্থ্য দফতর, কখনও ই-গভর্নেন্স এই পুরস্কার পেয়েছে। তবে এবার বন দফতর বা সংখ্যালঘু দফতর যে পুরস্কার পেতে চলেছে, তা অবশ্যই বাড়তি গুরুত্বের দাবি রাখে।
রাজ্য সরকারের সংস্থা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম এই বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এই সংস্থার চেয়ারম্যান আইএএস গুলাম আলি আনসারি। পুরস্কার প্রাপ্তিতে স্বাভাবিকভাবে তিনি খুশি। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সংখ্যালঘু পরিবারের পড়ুয়াদের স্কলারশিপ প্রদানে যে দ্রুত কাজ করে তারই স্বীকৃতি স্বরূপ এই গোল্ড স্কচ অ্যাওয়ার্ড। ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মৃগাঙ্গ বিশ্বাস, রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের বিশেষ সচিব সাকিল আহমেদ, জিএম মুহাম্মদ নকি-সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও খুশি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে বৃত্তি প্রদান করে গোটা দেশে রের্কড করেছে রাজ্য সরকার। প্রি-ম্যাট্রিক, পোস্ট ম্যাট্রিক, মেরিট কাম মিনস, স্বামী বিবেকান¨ মেরিট কাম মিনস বৃত্তি প্রদান করে আসছে। নিগমের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ সালেই ৪০ লক্ষের বেশি পড়ুয়াকে বৃত্তি প্রদান করেছে। যা গোটা দেশে রের্কড। গোটা দেশে যত সংখ্যাক সংখ্যালঘু পড়ুয়া বৃত্তি পায় তার থেকে সব ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ।
‘যৌথ বন অভিযান’ ক্যাটাগরিতে এই স্বীকৃতি পেয়েছে রাজ্যের বন দফতর। এই পুরস্কার প্রসঙ্গে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, সরকারের মূল চালিকাশক্তি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শমতো কাজ করেছি। এই কাজ প্রমাণ করেছে দেশের মধ্যে সবথেকে এগিয়ে বাংলাই। তাই এখানে আমার কোন কৃতিত্ব নেই কৃতিত্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। তার ভিসানকে সামনে রেখেই এগিয়েছি আমরা। আর তাতেই মিলেছে স্বীকৃতি।
এবার সংখ্যালঘু দফতরের ঐক্যশ্রী প্রকল্পও স্বীকৃতি পেয়েছে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তহবিল থেকে ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এবার রাজ্য সরকারের সেই প্রকল্পও পেতে চলেছে জাতীয় স্বীকৃতি। এ দিকে বাঁকুড়া জেলাকে কোভিড মহামারির সময় পুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা ১৭০০ থেকে ৪০০-এ নামিয়ে আনার জন্য বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনকে স্কচ (রৌপ্য) পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
অপারেশন পুস্তিকা নামে একটি অনন্য প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে ২৪ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে জেলার ২৩টি ব্লকে চালু করা হয়েছিল। প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে প্রতিটি গুরুতর কম ওজনের শিশুকে প্রতিদিন একটি করে ডিম এবং প্রতি মাসে ১ কেজি নিউট্রি মিক্স প্যাকেট খাওয়ানো, রোগ প্রতিরোধের জন্য এই সমস্ত শিশুকে চপ্পল প্রদান করা, এই শিশুদের সমস্ত পরিবারকে ফিল্টার প্রদান করা হয়েছে যাতে তারা পরিস্রুত ও নিরাপদ পানীয় জল পান করতে পারে। একইসঙ্গে এই শিশুদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সামগ্রিকভাবে এই প্রকল্পের সাফল্যের স্বীকৃতি দিল স্কচ অ্যাওয়ার্ড। মোটের উপর এই পুরস্কারে খুশি রাজ্য সরকার।