পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ‘মুহূর্তের উত্তেজনায়’ এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছি, শ্রদ্ধা খুনে বয়ান আফতাব আমিন পুনাওয়ালার। পুলিশের বয়ান অনুযায়ী গত ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব, তার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর বয়ান দিয়ে চলেছেন আফতাব। তবে আফতাব তদন্তে সহযোগিতা করছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একটি বিশেষ আদালতে শ্রদ্ধা-আফতাব মামলা চলছে। এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাণ্ডের শুনানি চলার পর সাকেত আদালত আফতাবের হেফাজতের দিন আরও চারদিন বাড়িয়েছে। আজ পাঁচদিন হেফাজত শেষে আফতাবকে আদালতে পেশ করা হয়, তার আর চারদিন পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানো হল।
আজ দিল্লির একটি বিশেষ আদালতে শুনানি চলার সময় শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত আমিন আফতাব পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তের উত্তেজনায় তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। সেই সঙ্গে আফতাবের অভিযোগ, তার সম্পর্কে যা যা বলা হচ্ছে, তা সব সত্য নয়। ২৮ বছরের আফতাব আমিন জানিয়েছেন, সে পুলিশের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন। পুলিশকে সে রোড ম্যাপ দিয়েছেন, যেখানে সে শ্রদ্ধার দেহাংশগুলি ফেলেছে। তিনি আদালতকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তিনি সমস্ত বিবরণ দেবেন, কিন্তু অনেক কিছু মনে করতে পারছেন না কারণ এটি অনেক দিন হয়ে গেছে।আফতাবের আইনজীবী অবিনাশ জানিয়েছেন, পুলিশ আদালতে আবেদন বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিল। কারণ আফতাবের বয়ান অনুযায়ী, তারা একটি পুকুরের স্কেচ তৈরি করেছেন। যেখানে তারা আফতাবকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চান। আফতাব আদালতে বলেন, তিনি পুলিশকে সহযোগিতা করছেন এবং পুলিশও তার সঙ্গে ভালো আচরণ করছে। আফতাব আদালতকে আরও বলেছে, সে মিথ্যা কথা বলছে না, আদালতকে বিভ্রান্ত করবে না। পুলিশ আদালতে তার দাবির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আফতাব তাদের জানিয়েছে, ব্লেড ও করাত সে গুরুগ্রামের ঝোপের মধ্যে ডিএলএফ ফেজ-৩- এ ফেলেছে। বয়ান অনুযায়ী দিল্লি পুলিশ তাদের টিম নিয়ে দুবার ঝোপে অভিযান চালায়। শুক্রবার প্রথম দিনের তদন্তের পরেই দিল্লি পুলিশ কিছু তথ্য পায় গুরুগ্রামের ঝোপ-জঙ্গল থেকে। সেই সমস্ত নমুনা ইতিমধ্যেই সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবটেরিতে পাঠানো হয়েছে। গত শনিবার তদন্তের দ্বিতীয় দিনে দিল্লি পুলিশ গুরুগ্রামের ঝোপে জঙ্গলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে অভিযান চালায়। কিন্তু তাদের খালি হাতেই ফিরতে হয়। শ্রদ্ধার খুনে যে দোকান থেকে করাত কিনেছিল পুলিশ সেই সেখানে আফতাবকে নিয়ে যায় পুলিশ। আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে একটি দোকানে যায় পুলিশ। সেই দোকান থেকে ২৫০ মিটার দূরত্বেই আফতাবের বাড়ি। এর গত সোমবার মেহরাউলি থানার পুলিশ স্থানীয় জঙ্গল থেকে ১৮টি হাড় উদ্ধার করে। শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মেলানোর জন্য তারা এখন পর্যন্ত একটি মাথার খুলির গোড়া এবং একটি শিরচ্ছেদ করা চোয়াল সহ ১৮টি হাড় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। রিপোর্ট এক থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যেই আসার কথা। দিল্লি পুলিশ আজ আদালতকে জানিয়েছে, প্রায় ৮০ শতাংশ তদন্ত সম্পূর্ণ। পরবর্তী কয়েক দিন তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মামলার মূল প্রমাণ এখনও অনুপস্থিত। সোমবার আফতাবের নারকো অ্যানালাইসিস টেস্ট করা হবে না, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) জানিয়েছে, তার আগে তাকে পলিগ্রাফিক পরীক্ষা করতে হবে।