শুভদীপ দেবনাথ, ডুয়ার্স: অসুস্থ হাতির সঙ্গীরা তান্ডব চালালো পাশের গ্রামে! গভীর রাতে বাজারে ঢুকে পরপর দুটি দোকানের শাটার ভেঙ্গে লুট করলো চালের বস্তা। নষ্ট করলো দোকানের ভেতরে থাকা বিভিন্ন রকমের সামগ্রী।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকেই নাথুয়া রেঞ্জের অন্তর্গত পার্শ্ববতী খেরকাটা জঙ্গলে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে একটি বুনো হাতি। যাকে রোজ রাতে তার সঙ্গীরা পাহারা দিতো বলেই বনকর্তাদের একাংশের দাবি। এমনকি শুড়ে করেও খাবার এনেও সেই অসুস্থ হাতিকে খাওয়াতো তার সঙ্গীরা। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সেই বুনো হাতি।
সোমবার ভোররাতে তারই সঙ্গীরা তাণ্ডব চালালো নাথুয়া বাজারে। এমনটাই মনে করছেন আশেপাশের গ্রামবাসী থেকে শুরু করে পরিবেশ প্রেমিরা।প্রসঙ্গত, গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন থেকেই জঙ্গলের সেই অসুস্থ হাতিটিকে নিয়মিত খাবার পৌঁছে দিচ্ছিলেন নিজেদের সাধ্যমত ।পাশাপাশি নজর রাখছিলেন তার উপর। যাকে ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয় এলাকায়। আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দাও। তবে কি সঙ্গী হাতির রাগের ক্ষোভেই এভাবে বাজারের মধ্যে ঢুকে পড়ছে বুনো হাতি? এই প্রশ্নই বর্তমানে ঘুরপাক খাচ্ছে। জঙ্গলের ভেতর অসুস্থ্ হাতির সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ রীতিমত রীতিমতো ক্ষুদ্ধ বনদপ্তরের ভূমিকায়।
স্থানীয়দের অনুমান, নাথুয়ার জঙ্গল থেকে দলছুট হয়ে হাতিটি বাজারে ঢুকে পড়ে। এরপর ব্যাবসায়ী রমেন সাহা ও সুরেশ প্রসাদ রস্তগীর দোকানের শাটার ভেঙে লুটপাট চালায়। প্রতিবেশীরা হাতির উপস্থিত টের পেয়ে চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে শুরে পেঁচিয়ে চালের বস্তা তুলে জঙ্গলের দিকে নিয়ে চলে যায়।
নাথুয়া ব্যাবসায়ী সমিতি সহ সম্পাদক সজল নাগ জানান, ডুয়ার্স জুড়ে প্রচণ্ড বন্য জন্তুর আনাগোনার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান যথেষ্ট ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোর আনুমানিক চার টায় নাথুয়া চৌপথী তে বিশাল আকৃতির গজরাজ আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতে এসে হাজির হয়ে বাজারের ব্যাবসায়ী রমেন সাহা ও সুরেশ প্রসাদ রস্তগীর দোকানের শাটার ভেঙ্গে স্বমহিমায় চাল, ডাল খেয়ে নেয়, তৎসহ প্রচুর জিনিস তছনছ করে চলেযায়। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী হয়। আমরা ব্যাবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বন্যপ্রাণী বিভাগের কাছে আবেদন রাখছি অতিসত্বর এর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করুন।
ডুয়ার্সের পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাসের কর্মকর্তা নফসফ আলীর মতে, হাতির স্মৃতিশক্তি খুবই মারাত্বক। ঘটনার পাশ্ববর্তী জঙ্গলেই দীর্ঘদিন ধরে একটি অসুস্থ হাতি রয়েছে। এরআগে শোনা গিয়েছে তার সঙ্গীরা হাতিটিকে পাহারা দিয়ে রাতের বেলা খাবার নিয়ে দিতো।বনদফতর সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা বনদপ্তরে নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবে।