পুবের কলম প্রতিবেদক: ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় সরকারি কর্মীদের ডিএ চার শতাংশ বেড়েছে কয়েকদিন আগেই। চলতি সপ্তাহেই বড়দিন এবং নববর্ষের উপহার হিসাবে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।। তবে, মহার্ঘ্যভাতার এই বর্ধিত পরিমাণে মোটেও খুশি নন ডিএ আন্দোলনকারীরা। নবান্নের বাইরে এই নিয়ে ধর্না শেষ হতে না হতেই এবার রাজ্য জুড়ে ‘জনসংযোগ যাত্রা’-র ঘোষণা করলেন আন্দোলনকারীরা। শুধু তাই নয়, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন, হাজরা মোড় থেকে শুরু হবে এই মিছিল। এতেও দাবি পূরণ না হলে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। পাশাপাশি, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তিনদিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে যৌথমঞ্চ। এই আবহে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা রাজ্য সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেছেন, মহার্ঘ ভাতা আরও বাড়ানো হবে। তবে এটি শর্তসাপেক্ষ।
শুক্রবার সাঁইথিয়ায় এক প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকার বকেয়ার টাকা মিটিয়ে দিলেই সরকারি কর্মীদের ডিএ আরও বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, “টাকার জন্য একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পথে বসতে হয়। এটা লজ্জার বিষয়। কেন্দ্রের এই সরকারকে টাকা ছাড়তে হবে নয় গদি ছাড়তে হবে।”
প্রসঙ্গত, ২১ ডিসেম্বর ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে মমতা বলেছিলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ১২৫ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছিলাম। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬৫ টাকা দেওয়া হয়েছে। ১২৫ শতাংশ যখন ছিল, তখন ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কম টাকা দেওয়া হয়নি। চার বছরের মধ্যে আমরা নয়া বেতন কমিশন গঠন করেছি। নয়া পে স্কেলের আওতায় ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য সরকার ছয় শতাংশ ডিএ দিয়েছে। সেজন্য চার বছরে ৪১৪৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।”
এরপর চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এই বর্ধিত ডিএ। ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারী, সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী, রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা এই বর্ধিত ডিএ পাবেন বলে ঘোষণা করেন মমতা। এর ফলে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে ১০ শতাংশ হবে।
উল্লেখ্য, ডিএ বৃদ্ধির পরেও নবান্নের বাইরে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি এবং বিক্ষোভ প্রসঙ্গে শুক্রবার পুরসভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে মেয়র বলেন, “যারা নাটক করতে চায় তারা নাটক করছে। এখনও কিছু আছে যারা বামফ্রন্টের সমর্থক। তারা বামফ্রন্টের সময় নাকি অনেক বেশি ডিএ পেত, এখন নাকি কমে গিয়েছে। তাই তারা এখন নাটক করছে। তারা এটা বলছেনা যে রিটায়ারমেন্ট গ্যারান্টি অন্য কোনও জায়গায় দেয় না। কেন্দ্র সরকারও পেনশন দেয় না। সেটা পশ্চিমবঙ্গ সরকার দিচ্ছে। তা বলছে না। একতরফা বলছে।”