পুবের কলম প্রতিবেদক: শীতেও কাবু হয়নি ডেঙ্গু। ফের ডেঙ্গুতে মারা গেলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং বিভাগের এক ছাত্রী। তৃতীয়বর্ষের ওই ছাত্রীর নাম ফারহানা বেগম। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের নার্সিং বিভাগের ছাত্রী ছিলেন তিনি। ক্যাম্পাসের হস্টেলেই থাকতেন তিনি। মঙ্গলবার জ্বর-সহ একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। বুধবার তাঁকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার সকালে ফারহানার লাস মালদার কালিয়াচকের শেরপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামেই এদিন ২ টা ৩০ মিনিট নাগাদ দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া ইরফান সাদিক জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে জ্বর নিয়ে তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর ডেঙ্গি পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু ক্রমেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তরুণীকে রাখা হয়েছিল ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিট বা আইটিইউ-তে। তবুও শেষরক্ষা হয়নি। এই ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবার ও স্থানীয়দের।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি নার্সিং-এর ওই পড়ুয়ার ডেঙ্গির প্রভাব দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শেষ দিকে তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়েছিল বলে জানান সহপাঠীরা।
ফারহানার হস্টেল সহপাঠী তারসিন মুস্তাফা বলেন, এক সঙ্গেই থাকতাম। ও আমার থেকে ছোট ছিল। তবে খুবই ভালো। পরোপকারী ছিলেন। তাঁর ইন্তেকালে আলিয়ার ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা মর্মাহত।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুরুস সালাম বলেন, আলিয়ার ছাত্রীর ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতা ছিল। পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় ওই ছাত্রীর একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে পরে। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনার পর প্রতিটি ছাত্রছাত্রীরা যাতে মশারি খাটায়, সে বিষয়ে কড়া নজরদারি রয়েছে। পাশাপাশি স্প্রে করার ব্যবস্থাও হয়েছে।
চলতি মরসুমে কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল চোখে পড়ার মতো। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। মশাবাহিত এই রোগে জেলায় জেলায় আক্রান্তও হয়েছিলেন অনেকে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। সরকারের তরফে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও ডেঙ্গি ঠেকাতে সচেতনতামূলক প্রচার এবং সতর্কবার্তা জারি করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। মনে করা হচ্ছিল, বর্ষার মরসুম কাটলেই ডেঙ্গি বিদায় নেবে।