পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মানুষের জীবন বড়ই আশ্চর্য্যের। কখনও খুব সাধারণ বিষয় নিয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, আবার বড় ধরনের কোনও কিছু ঘটনাও মানুষ খুব সহজভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার বাসিন্দা ৩৯ বছরের রবিজুল ইসলামের কথাই ধরা যাক। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। পারিবারিক দিক দিয়ে তিনি একজন সুখী মানুষ। এ পর্যন্ত রবিজুলের জীবনে আশ্চর্য্যের কিছুই নেই। কিন্তু রবিজুলের জীবন আর পাঁচজনের থেকে আলাদা। কারণ রবিজুল সাতটি বিয়ে করেছেন। কিন্তু স্ত্রীদের তার প্রতি কোনও অভিযোগ নেই। আর ৭টি স্ত্রীকে নিয়ে দিব্যি সুখে ঘর-সংসার করছেন রবিজুল। একই বাড়িতে মিলেমিশে থাকেন সকলেই।
রবিজুলের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ি গ্রামের মিয়াপাড়ায়। রবিজুল মায়ের মানত পূরণ করতে ৭টি বিয়ে করেছিলেন তিনি। তিনমাসের ব্যবধানে তিনটি বিয়ে করেছেন রবিজুল। সব কটি বিয়েই পারিবারিক সম্মতিতেই হয়েছে। ১৯৯৯ সালে প্রথম বিয়ে করেন রবিজুল। এরপর জীবিকার সন্ধানে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। দীর্ঘদিন সেখানে থেকে বছর দুয়েক আগে ফেরেন দেশে।
রবিজুলের কুষ্টিয়া হালসা গ্রামের রুবিনা খাতুন (৩৫), একই উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর এলাকার মিতা আক্তার (২৫), কিশোরগঞ্জের হেলেনা খাতুন (৩০), চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরুন নাহার (২৫), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বপ্না (৩০), একই উপজেলার ডম্বলপুর এলাকার বানু আক্তার (৩৫) ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার রিতা আক্তার (২০)।
১৯৯৯ সালে রবিজুল প্রথমে রুবিনাকে বিয়ে করেন, এই দম্পত্তির দুই ছেলে। ২০১৪ সালে লিবিয়ায় থাকাকালীন বিয়ে করেন হেলেনাকে, দ্বিতীয় পক্ষে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ২০২০ সালে কোভিডের সময় নুরুন নাহারকে বিয়ে করেন রবিজুল, তৃতীয় পক্ষে তার এক মেয়ে। ২০২২ সালে বিয়ে করেন স্বপ্নাকে। ২০২৩ সালে এসে যেন শুরু হয় তার “বিবাহ অভিযান”। তিন মাস আগে বিয়ে করেন বানুকে, আড়াই মাস আগে জুঁই আক্তারকে এবং দুই মাস আগে তার সংসারে আসেন সপ্তম স্ত্রী মিতা। সর্বশেষ বিয়েটি করিয়েছেন আগের ছয় স্ত্রীই। রবিজুলের ষষ্ঠ স্ত্রী জুঁই বলেন, “আমরা ছয়জন মিলে স্বামীর সপ্তম বিয়েটি দিয়েছি। সর্বশেষ বিয়ের সাক্ষীও ছিলাম আমরা।”
রবিজুল জানিয়েছেন, তিনি বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। শৈশবে তার একটি অসুখ ধরা পড়ে। সেই কারণে মানত করেছিলেন, ছেলে বেঁচে থাকলে তার ৭টি বিয়ে দেবেন তিনি। সেই মতো মায়ের মানত রাখতেই এই বিয়েগুলি করেছেন তিনি। রবিজুল জানান, তার কাজে খুশি পরিবার। ৭ স্ত্রী ও ৫ সন্তান নিয়ে সুখের সংসার তার। সব স্ত্রীই তার যত্ন নেন, ভালোবাসেন। সারাদিন সপ্তাহের সাত রাতে সাত বউয়ের কাছে থাকি। এতে কোনও সমস্যা হয় না।” রবিজুল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন লিবিয়ায় ছিলাম। দু বছর আগে দেশে এসেছি। বর্তমানে আমার একটি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সেন্টার আছে। এছাড়া ভাড়ায় চালিত কয়েকটি মাইক্রোবাস রয়েছে। আমি এখন ড্রাইভিং শেখাই।”
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রবিজুল সাত স্ত্রীকে নিয়ে একই বাড়িতে বাস করেন। সকলেই মিলেমিশে সংসার করে। রবিজুলকে নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই স্ত্রীদের। তাদের কথায়, সব কিছু জেনে শুনেই আমরা বিয়ে করেছি। স্বামী এমন কিছু করেন না, যাতে তাঁর মন খারাপ হয়। স্বামী খুবই ভালো একজন মানুষ।
আমাদের স্বামী এমন কিছু করেন না যাতে আমাদের মন খারাপ হবে। স্বামী খুবই ভালো মানুষ।”