পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মৃত্যুর পর দেহ দাহ করার বিধান আছে হিন্দুশাস্ত্রে। সেই মতো শ্মশানে দেহ সৎকার করা হয়। তবে এবার একটি শ্মশান নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ওড়িশার এই শ্মশানটিতে লেখা আছে ‘ব্রাহ্মণ শ্মশান’। রাজ্যের এই শ্মশানে শুধুমাত্র হিন্দুদেরই দেহ অন্ত্যোষ্টি করার বিধান রয়েছে। এই ঘটনায় সমালোচনা ঝড় উঠেছে। সরব হয়েছেন সিপিএম জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি গয়াধর গল। গয়াধর বলেন, এই শ্মশানে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের দেহ সৎকার করা, সংবিধানের অধীনে সমস্ত বর্ণের মানুষের জন্য নিশ্চিত করা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণদের জন্য আলাদা শ্মশান বরাদ্দ করা জাতিগত বৈষম্যকেই উসকে দেয়। গয়াধর ধল আরও বলেন, কোনও নাগরিক সংস্থার পক্ষে কেবল ব্রাহ্মণদের জন্য শ্মশান চালানো বেআইনি। অন্যান্য বর্ণের লোকদেরও শ্মশানে তাদের প্রিয়জনের শেষকৃত্য করার অধিকার দেওয়া উচিৎ। ঘটনায় ওড়িশার একটি নাগরিক সংস্থাও এই বৈষম্যের নিন্দা জানিয়েছে।
ওড়িশার হাজারীবাগিচা এলাকায় শ্মশানঘাটের প্রবেশপথে একটি ‘ব্রাহ্মণ শ্মশান’ সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। ১৫৫ বছরের পুরনো এই কেন্দ্রাপাড়া পুরসভার অধীনে এই সাইনবোর্ড ঝোলানো আছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে মৃত্যুর পরে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদেরই দেহ সৎকার করা হয়। তবে সাইন বোর্ডটি সবেমাত্র ঝোলানো হয়েছে। অন্যান্য বর্ণের লোকেদের অপর একটি শ্মশানে দাহ করা হয়। যেটি সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে।
ঘটনায় দলিত অধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ওড়িশা দলিত সমাজের জেলা শাখার সভাপতি নাগেন্দ্র জেনা বলেন, পুরসভায় দীর্ঘদিন ধরে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের জন্য একটি শ্মশান রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে জেনে আমি হতবাক হয়েছি। সরকারি সংস্থা আইন ভঙ্গ করে বর্ণ বৈষম্য প্রচার করছে। এই ধরনের কাজ যত তাড়াতাড়ি বন্ধ করা যায় ততই ভালো।
কেন্দ্রাপাড়া পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।