পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিন অধ্যুষিত গাজায় গত দেড়মাস ধরে অব্যাহত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। শয়ে শয়ে মানুষের প্রাণ সংহার চলেছে। প্রাণহানি হয়েছে অসংখ্য নিরীহ মানুষের। যার মধ্য বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে হঠাৎ একটি দাবি করে বসল ইসরাইল। ইহুদি রাষ্ট্রের দাবি, ভারতে আসার পথে লোহিত সাগরে ছিনতাই করা হয়েছে একটি গোটা পণ্যবাহী জাহাজকে। রবিবার সকালের দিকে ইয়েমেনের নিকটবর্তী দক্ষিণ লোহিত সাগর থেকে দ্য গ্যালাক্সি লিডার নামের ওই জাহাজ জবরদখলের ঘটনা ঘটে।
তাদের আরও দাবি, ব্রিটেনের একটি সংস্থার মালিকানাধীন জাহাজটি জাপানের একটি সংস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী নিয়ে আসার ভারতের দিকে আসার সময় সেটি জবরদখল করা হয়। ইসরাইলের তরফে এই ঘটনার সমস্ত দায়ভার তোলা হয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুথির দিকে। সেই সঙ্গে তেল আভিভকেও কাঠগড়ায় তুলেছে ইসরাইল। এই জাহাজকে ঘিরে ইহুদি বাহিনী একটির পর একটি চাঞ্চল্যকর দাবি তুলেছে। তাদের দাবি, ব্রিটেনের একটি সংস্থার মালিকাধীন ওই জাহাজ জাপানের একটি সংস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। জাহাজটিতে মোট ২৫ জন কর্মী ছিলেন। সকলেই ইউক্রেন, বেলারুশ, মেক্সিকো সহ অন্যান্য দেশের নাগরিক। অন্যদিকে চুপ করে বসে থাকেনি হুথি।
ইসরাইলের জাহাজ ছিনতাইয়ের অভিযোগ স্বীকার করে হুথির বক্তব্য, একটি ইসরাইলি পণ্যবাহী জাহাজকে দক্ষিণ লোহিত সাগরে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিকে চাপের মুখে ইসরাইলের দাবি, জাহাজটি তাদের নয়। জাহাজটিতে ইসরাইলের কোনও নাগরিক ছিলেন না। হুথির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জাহাজে থাকা ২৫ জন কর্মীকে ইসলামিক ও আদর্শ অনুযায়ী তাদের হেফাজতে রাখা হবে। এদিকে জাহাজ ছিনতাই নিয়ে ক্রমশ চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। অপর একটি সূত্রের দাবি, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জাহাজটিকে অপহরণ করেছে হুথি।
হুতি জঙ্গিদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেন, তাঁরা জাহাজটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। এতে থাকা নাবিকদের যাবতীয় নিরাপত্তা তাঁরা দিচ্ছেন। ইয়াহিয়া আরও বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরে চলা আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাব। ইসরাইলের মালিকানাধীন জাহাজগুলোতে অন্য দেশের নাবিকদের কাজ না করার আহ্বানও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
ইরানকে দুষে একটি বিবৃতি দিয়েছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সচিবালয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের মদদেই আন্তর্জাতিক জলপথের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করা হচ্ছে। বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়েছে, যে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী সমস্ত ধরণের জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করার তাদের অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে। হুতিদের দ্বারা জাহাজ জবরদখলের পেছনে ইরানের হাত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে ইরান বিশ্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার এই ঘটনার সঙ্গে তেহরান কোনওভাবে জড়িত নয়। কোনও প্রমাণ ছাড়াই ইসরাইল তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তুলছে।
গত সপ্তাহে হুথি নেতা আব্দুলমালিক আল-হুথি ইসরাইলি জাহাজ বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের চোখ খোলা রয়েছে। লোহিত সাগরে প্রত্যেকটি ইসরাইলি জাহাজ আমাদের নজরে রয়েছে। যে কোনওটিতে আমরা অনুসন্ধান চালাতে পারি।”