পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ প্রথমে চমকাও-ধমকাও। নাহলে ইডি-সিবিআইকে লাগিয়ে রেইড করাও। তাতেও যদি কাজ না হয়, তাহলে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর ‘অপরাধে’ হাজতে ঢোকাও। সম্প্রতি এমনভাবেই চলছে সুরক্ষিত হাতে থাকা ভারতবর্ষ। আসল খবর জনসমক্ষে তুলে ধরলে, বলা ভালো কেন্দ্র সরকারের জনবিরোধী কাজের বিরোধিতা করলেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ এখন খুবই সাধারণ ব্যাপার। গত কয়েকবছর ধরে পুলিশ ইডি এবং আয়করের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো নানান অজুহাতে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা এবং কয়েক ডজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। আর নিউজক্লিকের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ এই প্রথম নয়।
সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, নিউজক্লিক ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ ‘ব্যবস্থা’ নিয়েছে। কমপক্ষে ৩৫ জন সাংবাদিককে কয়েক ঘন্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এবং তাঁদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছিল। দিল্লি পুলিশ যাঁদের ম্যারাথন জেরা করেছিল তাঁদের মধ্যে শুধু প্রবীর পুরকায়স্থ, উর্মিলেশ, পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা, ভাষা সিং, অভিসার শর্মা, ওনিন্দ্য চক্রবর্তীর মতো সিনিয়র সাংবাদিকরাই নয়, ডেস্কে কর্মরত কপিরাইটার, অনেক তরুণ সাংবাদিকও রয়েছেন। দিন শেষে পুলিশ অন্তত ৪৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এবং দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় তাঁরা নিউজক্লিকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং কোম্পানির এইচআর প্রধান অমিত চক্রবর্তী। এর আগেও পুলিশ, ইনকাম ট্যাক্স, ইডি-র মতো সংস্থাগুলি অনেক সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে, তবে এই প্রথম প্রতিষ্ঠানের মালিক বা মালিকরা ছাড়া, সমস্ত কর্মচারী, সাংবাদিক এবং এমনকি ফ্রিল্যান্সারদেরও টার্গেট করা হয়েছে।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম সংগঠনের পক্ষ থেকে এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। ‘দ্য কাশ্মীরওয়ালা’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ফাহাদ শাহকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। একইভাবে, এনডিটিভি, কুইন্ট, ভারত সমাচার, কাশ্মীর টাইমস, দ্য নিউজ মিনিটের মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগ, ইডি এবং পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়াও যেসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন সিদ্দিক কাপান, মোহাম্মদ জুবায়ের, প্রয়াত সাংবাদিক বিনোদ দুয়া, রানা আইয়ুব, ইরফান মেহরাজ, কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম, পবন জয়সওয়াল, পাওজেল চাওবা।