পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ বিলিয়ন বিলিয়ন ঋণ নিয়ে শোধ না দিয়েই বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে শিল্পপতিরা। আবার নির্দিষ্ট কয়েকজন শিল্পপতি-বন্ধুদের ঋণখেলাফি ঘোষণা না করে মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। আর মাত্র কয়েক হাজার টাকা দেনার দায়ে আত্মহত্যা করছেন দেশের শত শত কৃষক, দরিদ্র পরিবারের মানুষ। ২০১৪ সালের পর থেকে এটাই ‘স্বাভাবিক’ হয়ে উঠেছে দেশে। বাংলার মমতা সরকার একশো দিনের কাজের টাকা পাচ্ছে না, অথচ একের পর এক ঋণ মকুব করে দিচ্ছে কেন্দ্র। এ যেন খয়রাতির সরকার। এই খয়রাতির নয়া কীর্তি এবার সামনে এলো রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য থেকেই। গত ৯ বছরে কেন্দ্রের মোদি সরকার ২৫ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দিয়েছে। এই টাকার অঙ্ক চোখ কপালে তোলার মতোই। তথ্যের অধিকার আইনে দায়ের করা মামলায় খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই তথ্য দিয়েছে। সুরাতের সমাজকর্মী সঞ্জয় এওয়াজা মামলা দায়ের করে জানতে চেয়েছিলেন, ঋণ মকুব করে কত টাকার রাজস্ব ক্ষতি করেছে কেন্দ্র। আরবিআইয়ের জবাবেই উঠে এসেছে এই বিস্ফোরক তথ্য।
২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ন’টি অর্থবর্ষে এই অর্থ ব্যয় করেছে তারা। মোদির কার্যকালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণ মকুব হয়েছে ১০.৪১ লক্ষ কোটি টাকা। আর ১৪.৫৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করা হয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। বিরোধীদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের করের টাকায় দানসত্র খুলে খয়রাতি করে ভোট টানতে চাইছে বিজেপি সরকার। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ ঋণছাড় দেওয়া হয়নি কখনও। এর আগে ইউপিএ সরকারের দুই মেয়াদে (২০০৪-২০১৪) ঋণ ছাড় দেওয়া হয়েছিল ৩.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে ৯ বছরেই এনডিএ সরকার প্রায় ৮ গুণ বেশি ঋণ মকুব করেছে। শিল্পপতি বন্ধুদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই এসব করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতে প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসছে কেন্দ্রের শাসকদলের দিকে। দেশের অর্থনীতির এমনিতেই বেহাল দশা। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে। নেই কর্মসংস্থানও। এই অবস্থায় কাদের ঋণ ছাড় দেওয়া হল, উঠছে প্রশ্ন। কাদের এই ঋণমকুব করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য অবশ্য দেওয়া হয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আরটিআই-জবাবে।