সাহিন হোসেন, সাগরদিঘি, মুর্শিদাবাদ: অবশেষে কেরলে নিখোঁজ অসিকুলের লাশ উদ্ধার হল শুক্রবার। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুরের বাসিন্দা অসিকুল ইসলাম কেরলের কান্নুর জেলার ইরাক্কুর থানার কুত্তব জংশন এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজে যান। সেখানেই একসঙ্গে কাজ করতেন দুই বন্ধু গণেশ মণ্ডল ও পরেশ মণ্ডল। সেখান থেকে ২৮ জুন সোমবার থেকে অসিকুলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
ইরাক্কুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। এরপর কাউকে কিছু না বলে একদিন পর সেখান থেকে পালিয়ে যায় গণেশ মন্ডল ও পরেশ মণ্ডল। ঘটনার তদন্তে নেমে গণেশ ও পরেশের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে কেরল পুলিশ। গত মঙ্গলবার পরেশকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাকে কেরলে নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় পরেশ মণ্ডলকে জেরা। জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। জেরার পর পুলিশকে পরেশ মণ্ডল জানায়, বন্ধু অসিকুলকে খুনের পর তথ্য প্রমাণ লোপাট করার জন্য নির্মীয়মান বাড়ির বাথরুমের মেঝেতেই অসিকুলের দেহ পুঁতে দিয়েছিল পরেশ ও গণেশ মণ্ডল দুজনে মিলে। পুলিশকে অভিযুক্ত পরেশ মন্ডল জানিয়েছে, কাজের শেষে অসিকুল যখন ঘুমোচ্ছিলেন তখন অসিকুলের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে তারা। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন অসিকুল। এরপর দেহ নির্মীয়মান বাড়ির বাথরুমের মেঝেতে পুঁতে দেয় দুজনে। খুনের পর তারা অসিকুলের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মিথ্যে গল্প ফাঁদে ও অসিকুলের ভাই মোমিনুল ইসলাম মোমিনকে সেকথা জানায়। রাজমিস্ত্রীর কাজে সেখানে কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকত অসিকুলের ভাই মোমিন।
শুক্রবার পরেশ মণ্ডলকে জেরা করা হলে পরেশ মণ্ডলের মুখ থেকে বন্ধু অসিকুলকে খুনের সব তথ্য বেরিয়ে আসে। অভিযুক্ত দুইজনের কঠোরতম শাস্তি তথা ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন অসিকুলের বাবা নজরুল ইসলাম। অসিকুলের হত্যাকাণ্ডের খবর শোনার পর সমগ্র সাগরদিঘি জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অসিকুলের নৃশংস হত্যাকান্ডের মূল পরেশ মণ্ডল গ্রেফতার হলেও অপর খুনি গণেশ মণ্ডল পলাতক।