উজ্জ্বল বন্দ্যেপাধ্যায়, কুলতলি: সুন্দরবনে বাঘে আক্রান্ত লকাই নস্করের পরিবারের হাতে আদালতের নির্দেশ মেনে ক্ষতিপূরণের টাকা বুধবার তুলে দেন বন দফতরের আধিকারিকরা। অবশেষে ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ টাকা পেলেন সুন্দরবনের শান্তিবালা নস্কর। গত ৩ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেছেন, শান্তিবালা দেবীর স্বামী লক্ষিন্দর (লকাই) নস্কর বাঘের আক্রমণে সুন্দরবনের কোথায় মারা গেছেন সেটা আদৌও গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোর বা বাফার এলাকা যেখানেই মারা যাক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বাঘের আক্রমণে মারা গেছেন এটা প্রমাণ হলেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদি তিনি আইনও ভেঙে থাকেন তবুও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
এপিডিআর এর উদ্যোগে এই প্রথম আদালতের রায়ে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হল বনদফতর। সুন্দরবনের মানুষ এদিন দুহাত তুলে এপিডিআর কর্মীদের আশীর্বাদ জানালো।
বুধবার ক্যানিং বনদপ্তরের অফিসে ডেকে বনদফতরের অফিসাররা ৫ লক্ষ টাকার চেক শান্তিবালা দেবীর হাতে তুলে দেন।
এপিডিআর এর উদ্যোগে করা এই মামলায় শান্তিবালা দেবীর আইনজীবী ছিলেন কৌশিক গুপ্ত। তিনি এপিডিআর এর আইনজীবী। এদিন বনদফতরের অফিসে শান্তিবালা দেবীকে নিয়ে গিয়েছিলেন মিঠুন মন্ডলের নেতৃত্বে এপিডিআর কর্মীরা।
হাইকোর্টের আদেশ ছিল ১৩ অক্টোবরের মধ্যেই ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বনদফতর টাকা মিটিয়ে দেওয়ায় মিঠুন মন্ডল ও শান্তিবালা দেবী বনদফতরের কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
আগামী দিনে বনদফতরের কর্মীদের কাছ থেকে একই রকম সহযোগিতা আশা করেন বলে এদিন এপিডিআরের জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল জানালেন উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান। এদিন মিঠুন মন্ডল এও জানান, সুন্দরবনে আরও বহু পরিবার আছে যাদের বাড়ির লোক বাঘের বা কুমিরের আক্রমণে নিহত হয়েছে বা আহত হয়েছে। কিন্তু কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি।
মিঠুন সবার কাছে আবেদন জানান, এ রকম পরিবারগুলি কাগজপত্র সহ এপিডিআর এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে এপিডিআর ক্ষতিপূরণ আদায়ের লড়াইয়ে তাঁদের সহযোগিতা করবে। তাদের পাশে থাকবে। মিঠুন আরও জানান, শুধু ক্ষতিপূরণ নয় সুন্দরবনের মৎসজীবী ও মৌলেদের অধিকারের দাবি এপিডিআর লাগাতার কাজ করে যাবে।