পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধি সোমবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বলেন সর্বসম্মতভাবে জাতি-ভিত্তিক আদমশুমারির পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। ভোট জয় হলেই কংগ্রেস সরকার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করবে। সোমবার কংগ্রেসের সদর দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘আমরা জাতিভিত্তিক শুমারি নিয়ে চার ঘণ্টা আলোচনা করেছি। কেউই এর বিরোধিতা করেননি। দেশের দরিদ্রদের মুক্তির জন্য এটি হবে একটি শক্তিশালী প্রগতিশীল পদক্ষেপ ।’
দেশব্যাপী জাতিগণনার কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে ওবিসিরা। কংগ্রেস বলেছে যেখানেই তাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানেই হবে জাতিগণনা। তুলে দেওয়া হবে ৫০ শতাংশ কোটা ক্যাপ। জনসংখ্যার ভিতিত্তে ওবিসি, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের দেওয়া হবে সংরক্ষণ। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ওবিসিরা। ওয়ার্কিং কমিটিতে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা ক্ষমতায় এলে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ সরিয়ে একটি আইন আনা হবে।
তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসিরা এখন মোট ৪৯.৫ শতাংশ সংরক্ষণ পান। জেনারেলদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল সামাজিক গোষ্ঠীগুলির জন্য সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন বিচারপতি ভি. ঈশ্বরাইয়া বলেছেন, কংগ্রেস আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুতর বলে মনে করছে। দেখে মনে হচ্ছে কংগ্রেস তাদের পুরাতন ভুল বুঝতে পেরেছে। এখন তারা বুঝছে জাতপাতের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংরক্ষণ পাওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে জাতি শুমারি অত্যন্ত গুরুতর। ঈশ্বরাইয়া আরও বলেন, কংগ্রেসের উচ্চবর্ণের লবি দলের এই সিদ্ধান্তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে নাও পারে।
মোস্ট ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ফোরামের চেয়ারম্যান পি.সি. পতঞ্জলি বলেন, কংগ্রেস হয়তো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে একথা স্বীকার করার উপায় নেই যে এটি সাধারণভাবে ওবিসি এবং বিশেষ করে অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণীর মনে নতুন করে আশা তৈরি করেছে। তিনি আরও বলেন,‘কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি জাতীয় আদমশুমারির আগে জাতি শুমারি করতে পারে। এটা সত্য যে ওবিসিদের, বিশেষ করে ইবিসিদের(অত্যন্ত অনগ্রসর) সরকারি চাকরি এবং উচ্চশিক্ষায় প্রতিনিধিত্ব হতাশাজনক। কংগ্রেস দেখেছে আগের নির্বাচনে ওবিসি এবং ইবিসি ভোটের একটা বড় অংশ গেছে বিজেপির ঝুলিতে।
বিচারপতি জি রোহিণীর নেতৃত্বাধীন রোহিণী কমিশন ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে নিজেদের সুপারিশ আগেই জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে। কিন্তু তাকে তেমন একটা আমল দেয়নি মোদি সরকার। মনুস্মৃতি যায় বলুক না কেন, বিজেপির উচিত বাস্তবতার দিকে নজর দেওয়া। তা নাহলে আপন যোগ্যতায় গেরুয়া শিবির পাঁক তৈরী করলেও সেখানে হয়ত পদ্মের ফলন ভালো নাও হতে পারে। মনে করছেন অনেকে।