পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সোমবার ডেঙ্গু নিয়ে সব রাজ্যের জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। দুই ২৪ পরগনা , হাওড়া, হুগলির জেলাশাসকদের উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে।
রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে প্রশাসন। মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর ডাকা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সব জেলার জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, কলকাতা পুরসভার কমিশনার এবং স্বাস্থ্য কর্তারা।
বৈঠকে আশঙ্কা করা হয় গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জল জমার সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে প্রশাসনের আশঙ্কা পুজোর আগে ডেঙ্গি বাড়তে পারে। এমনিতে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গু বাড়তে থাকায় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে জল জমায় সিদুঁরে মেঘ দেখছে প্রশাসন। এই বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশিকা পালনের কথা বলা হয়েছে। এই নির্দেশ না মানলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন।
নবান্নের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ডেঙ্গুর হটস্পট চিহ্নিত করে সমস্ত এলাকায় সাফাই অভিযান চালানো। আর্বজনার স্তূপ পরিষ্কার করা। কীটনাশকের মাধ্যমে মশার লার্ভা ধ্বংস করা কাজ নিয়মিত জারি রাখতে হবে। বৈঠকে নিজ নিজ এলাকার সমস্ত পুরসভার কাউন্সিলারদের সঙ্গে জেলাশাসকদের বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। আরও বলা হয় শহর ও তৎসলগ্ন বাজারগুলিতে সাফাই অভিযান চালাতে হবে। রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল চত্ত্বরে নিয়মিত সাফাই অভিযান চালাতে হবে। কোথাও যাতে জল না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
জেলা পরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি দল নিয়মিত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিদর্শন করবে এবং সেখান কার ডেঙ্গু পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ডেঙ্গু নিয়ে নিয়মিত নজরদারি রাখতে হবে। সরকারের দেওয়া নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
নবান্নের বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেন,নর্দমায় যাতে জল আটকে জল জমতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। নিয়মিত সচেতনতামূল কর্মসূচির আয়োজন করবে প্রশাসন। হটস্পট এবং ঘিঞ্জি বস্তি এলাকায় মশারি বিতরণ করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রেল ও মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও নিজস্ব এলাকায় সাফাই কর্মসূচি চালাতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গু রোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবান্নের বৈঠকে ডেঙ্গু মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সমস্ত সরকারি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্রুত রোগ নির্ণয় হলে তবেই সঠিক চিকিৎসা করা যাবে। তাতে মৃত্যু আটকানো অনেকটাই সহজ হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।