পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: হিজাব পরেই এশিয়ান গেমসে রেফারির ভূমিকায় দেখা যাবে শাহিন আখতারকে। বিশ্বের তাবড় ক্যারাটে খেলোয়াড়দের নিয়ে গোটা খেলাকে পরিচালনা করবেন ৫২ বছর বয়সী এই শাহিন। চিনে চলমান ‘১৯তম জিয়াংঝাও 2022 এশিয়ান গেমস’-এ এই প্রথম মহিলা হিসেবে ‘অফিসিয়েটিং রেফারি’ নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। হিজাব পরেই ক্যারাটে খেলে চারবার ভারতের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন শাহীন। অস্ত্রোপচারের পরও বিশ্বব্যাপী সমস্ত খেলায় অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি ক্যারাটের শিক্ষিকা। ১৩ বছর বয়স থেকে ক্যারাটে কিক, স্ট্যান্স, পাঞ্চ, ব্লক এবং চপ শিখেছিলেন শাহিন। ক্রাইস্ট চার্চ স্কুল থেকে পড়া সম্পূর্ণ করে মুম্বাইয়ের চার্চগেটের এইচআর কলেজ থেকে বি.কম ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। স্কুল জীবন থেকেই ক্যারাটের প্রতি অন্যরকম নেশা ছিল তাঁর। নেশা থেকেই পেশায় পরিণত হয়েছে ক্যারাটে। তাঁর মেয়ে সানা হাভা এবং ছেলে আয়ান আনসারিও ক্যারাটেতে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন।
জানা যায়, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে যুব লীগ থেকে প্রিমিয়ার লিগ, দক্ষিণ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে সাফল্য পেয়েছেন। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ইভেন্টগুলিতে রেফারি করেছেন। রেফারি হিসেবে শৃঙ্খলা ও খ্যাতির জন্য পদক এবং সম্মানও অর্জন করেছেন ক্যারাটে শিক্ষক শাহিন আখতার। তিনি বলেন, ‘জিয়াংঝাও, আমি ৫-৭ অক্টোবর পুরুষ ও মহিলাদের ক্যারাটে ইভেন্টে অফিসিয়াল রেফারির দায়িত্ব পালন করব। এশিয়ার ৪২ টি দেশ থেকে শীর্ষ চ্যাম্পিয়নরা খেলায় অংশগ্রহণ করবে। আমার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব’।
এশিয়ান গেমসে সমগ্র এশিয়া থেকে দুই বিলিয়ন মানুষ তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ এবং সিদ্ধান্তকে নজরে রাখবেন। ফলে তাঁর দায়িত্বটি অনেকাংশেই চ্যালেঞ্জিন। শাহিন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে খেলোয়াড় আসবে, তারা প্রত্যেকেই পদকের জন্য লড়াই করবে। রিংয়ে থাকা সমস্ত দেশের শীর্ষ শ্রেণীর চ্যাম্পিয়নদের পাশাপাশি স্টেডিয়ামে বিভিন্ন দেশের ক্যারাটে বিশেষজ্ঞ, ক্রীড়া কর্মকর্তা, ভিআইপি, বিচারক এবং দর্শকরা থাকবেন। আমার যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত স্টেডিয়ামের ভেতরেই বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই আমার প্রধান কাজ হবে খেলাকে সুস্থ এবং নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করা’।
শাহিন ক্যারাটে ইন্ডিয়া অর্গানাইজেশনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর ‘অ্যাকাডেমি অফ মার্শাল আর্টস’ স্কুলের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মকে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রীয়-জাতীয়-আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন এবং রেফারি তৈরির চেষ্টা করছেন। আশা প্রকাশ করে শাহীন বলেন, ‘আমার দীর্ঘ যাত্রা তরুণ প্রজন্মকে ক্যারাটেকে ক্যারিয়ারের বিকল্প হিসাবে গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করবে। আমি তরুণ প্রজন্মকে সাহায্যের জন্য সবসময় আছি’।