পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আইসিএসই বোর্ড থেকে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বোর্ডে আগেই সংস্কৃত ভাষা বাধ্যতামূলক করার পর এবার উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে সংস্কৃত অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ জারি করা হল। বিরোধীদের অভিযোগ, এভাবেই শিক্ষায় পুরোপুরি গৈরিকীকরণের কাজ শুরু করল উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার।
বর্তমান হিন্দি, কুমায়ুনি, গড়োয়ালি এবং জৌনসারি এই চারটি ভাষা উত্তরাখণ্ডের প্রধান ভাষা। এ ছাড়াও উর্দু, পঞ্জাবি, বাংলা, নেপালি, থারু, দারমিয়া ইত্যাদি ভাষার প্রচলন রয়েছে। মজার ব্যাপার, উত্তরাখণ্ডের প্রধান দু’টি আঞ্চলিক ভাষা, কুমায়ুনি ও গড়োয়ালিকে বিপন্ন ভাষা বলে চিহ্নিত করেছে ইউনেস্কো। উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড রাজ্য জুড়ে ১১৭টি মাদ্রাসায় সংস্কৃত এবং এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃত এবং এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্তে সে-রাজ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান শাদাব শামস বোর্ডের সদর দফতরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন। শামসের দাবি, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষার্থীদের আরও ব্যাপক শিক্ষা প্রদান করা, যাতে তারা কেবল আরবি নয়, অন্যান্য ভাষাও শিখতে পারে। তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার প্রাথমিক ভাষা সংস্কৃতের সঙ্গে পদার্থবিদ্যা, রসায়নের মতো বিষয়গুলিও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা পড়বে। এই মাদ্রাসাগুলি, যা ওয়াকফ বোর্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হয়, এখন এমন একটি পাঠ্যক্রম তৈরি করছে যাতে বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’ শাদাব শামস ব্যাখ্যা করেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃত অন্তর্ভুক্ত এবং এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের একটি বৈচিত্র্যময় পাঠক্রম দিচ্ছি। রাজ্য সরকার এই পাঠ্যক্রম সম্প্রসারণ বাস্তবায়নে মাদ্রাসাগুলিকে সহায়তা করার জন্য আর্থিক সহায়তা করছে।’
মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে সংস্কৃত অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তে উত্তরাখণ্ডের আলেম-উলেমারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আগামী সপ্তাহে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলোচনায় বসছেন তারা। এই আলোচনায় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি, উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড, ধর্মীয় পণ্ডিত এবং মাদ্রাসা প্রশাসক-সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।