পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: হিজাব প্রগতির অন্তরায় নয়। ফের একবার তা প্রমাণ করলেন নাদিয়া আসলাম। বয়স ৪০। গোয়ার পাঞ্জিমের বাসিন্দা । একজন সফল উদ্যোক্তা। বানান কেক। শুধু সুস্বাদু কেক নয়, টেক্সটাইল ডিজাইনিং-এও পারদর্শী তিনি। গত সাত বছরে বিয়ে, জন্মদিনের মতো বিবিধ অনুষ্ঠানে ২০০০-বেশি কেক, পেস্ট্রির মতো পণ্য বিক্রি করেছেন। দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে এই হিজাবি কন্যার।
এদিন সংবাদমাধ্যমে নাদিয়া জানান, বিয়ের পরে আমি টেক্সটাইল ডিজাইনিং পড়ার জন্য কলেজে ভর্তি হয়। নিজস্ব বুটিকও খুলেছিলাম। কিন্তু আমার নবজাতক সন্তানকে সময় দেওয়ার জন্য কাজ ছেড়ে ছিলাম। ছোট্ট থেকেই কেকের প্রতি আমার ভালোবাসা ছিল। সেই ভালোবাসা থেকে বাড়িতেই হরেক রকমের কেক, পেস্ট্রি বানাতে শুরু করি। শুরুর দিকে অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল আমাকে। তবে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অশেষ সমর্থনে এই ব্যবসাকে আমি দাঁড় করাতে পেরেছি। স্বামী রেহান শেখ প্রতিটি পদক্ষেপে আমাকে উৎসাহিত ও সাহায্য করেছেন। উনি না থাকলে আজ আমি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারতাম না। প্রত্যেক স্বামীর উচিৎ এইভাবেই তাঁর স্ত্রীর সমর্থনে লড়াই করা। পাশে দাঁড়ানো। ব্যবসার হিসাব-নিকাশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন আমার স্বামী। আমার তিন সন্তানও আমাকে এই কাজে সাহায্য করে। অভিভাবকরা অনেক সময় মেয়েদের এই ধরণের উদ্যোগকে খুব সহজ ভাবে নিতে পারেন না। তাঁদের কাছ থেকে সেই ভাবে মেলেনা উৎসাহ। তবে আমার ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। মায়ের উৎসাহ পেয়েছি বরাবর।
হিজাব প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, পর্দাপ্রথা ইসলাম ধর্মের বিশেষ অঙ্গ। কিন্তু এই প্রথা ও স্বনির্ভর হওয়ার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। শালীনতা রক্ষা করেও প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। পোশাক-পরিচ্ছদ, চিন্তাভাবনায় আধুনিক হওয়ার পর আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন। সমাজে পিছিয়ে রয়েছে মহিলারা! আমাদের গায়ে লাগানো অলিখিত এই ট্যাগ আমি মুছে দিতে চাই। মেয়রা বিশেষ করে হিজাব পরিহিতারা কোনও অংশে কম নয়। এটা বিশ্বের কাছে বার্তা দিতে চাই আমি। ইসলাম মেনে এবং এর নির্দেশিকা অনুসরণ করে জীবনে সাফল্য অর্জন করা যায়। কুরআন-এ প্রথম ঐশ্বরিক বাণী ছিল ‘ইকরা’। অর্থাৎ পড়াশোনা করা। ওই নির্দেশ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। ইসলামে নারীর অধিকার খর্ব করা হয়নি। যদিও ইসলামকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে অনবরত।