পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ‘যাঁরা অন্যের ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করেন, তাঁরা পরোক্ষে নিজেদের ধর্মকে অপমান করেন। এই ধরনের কাজ যাঁরা করেন তাঁরা ধর্মের পথে চলেন না। তাঁদের একমাত্র কাজ সমাজে সর্বদা ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো। প্রত্যেকের উচিত একে অপরের ধর্মগ্রন্থকে সম্মান করা।’ সোমবার সন্ধ্যায় ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল হাউস (দিল্লি)-এর ‘পবিত্র কুরআন, সমস্ত পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে সম্মানের পতাকাবাহী’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন স্বামী চন্দ্রদেবজী মহারাজ।
ইরান কালচার হাউস নয়াদিল্লির কাউন্সেলর ড. ফরিদুদ্দিন ফরিদ উল আসর বলেন, ‘একজন ব্যক্তি সে যে ধর্মের অনুসারীই হোন কেন, তাঁর উচিত সব ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে সম্মান করা, পৃথিবীর সব ধর্মই এই শিক্ষা দেয়।’ উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজের ধর্মীয় গ্রন্থকে যতখুশি শ্রদ্ধা করুন, ভালোবাসুন, সম্মান করুন। কিন্তু অন্যের ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে কিছু বলবেন না। ইসলাম সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি ধর্ম। সমগ্র বিশ্ববাসীর হেদায়েতের জন্য আল্লাহ্তায়ালা নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) -এর মাধ্যমে নাজিল করেছেন। সাম্প্রতিককালে যে দেশে কুরআনকে অপমান করা হয়েছে, তা অসহনীয়। স্বাধীনতার মানে এই নয় যে, অন্য ধর্মীয় গ্রন্থের অসম্মান করতে হবে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মীয় নেতারই নন, বিশ্বের সবক’টি মুসলিম দেশ গর্জে উঠেছে। এরপর ডা. ফরিদউদ্দিন বলেন, সুইডেনে যেভাবে কুরআনের অপমান করা হচ্ছে, তা অবিলম্বে রোখা খুবই জরুরি।
প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ এবং পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত অধ্যাপক ড. আখতারুল বাসে বলেন, ইসলাম তার শান্তির বাণী কুরআনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ডেনমার্কে যেভাবে কুরআনের অপমান করা হচ্ছে, সব ধর্মের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত এবং প্রকাশ্যে এই ঘটনার নিন্দা করা উচিত।
এদিনের আলোচনা সভায় কাশ্মীরি গেট শিয়া মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহসিন তকবি বলেন, মনুষত্ব থাকলে উন্নতি হবেই। নাহলে দারিদ্রতা হবে নিত্যসঙ্গী। পবিত্র কুরআন চিন্তার স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, কিন্তু সীমা অতিক্রম করবেন না। ডেনমার্কে যেভাবে কুরআনে অবমাননা করা হচ্ছে, তা খুবই দুঃখজনক। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অধিকার কারও নেই। কুরআন-এ-করীমের সঙ্গে মুসলিমদের ভাবাবেগ জড়িত রয়েছে।
আজমীর শরীফ দরগাহর সৈয়দ সালমান চিশতী বলেন, খাজার বার্তা হলো ভালোবাসা বিভাজন ও বিদ্বেষ দূর করা। ক্বারী হায়দার মেহেদীর পবিত্র কুরআন-ই-পাক তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন আল হিন্দ তালিম জাদিদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি আফরোজ আলম কাসমী।