পুবের কলম প্রতিবেদক: খাদির মসলিন কাপড়ের ওপর মসলিন সুতো দিয়ে তৈরি রাখি। তার ওপর বাংলায় লেখা ‘জয় বাংলা’, সঙ্গে ‘সংßৃñতি দিবস, পশ্চিমবঙ্গ সরকার।’ কিন্তু সেই রাখি এখন ঢালাও বিক্রি হচ্ছে উত্তর, পশ্চিম আর মধ্য ভারত জুড়ে। দেখা মিলছে পূর্ব ভারতের মাটিতেও। আর তা দেখেই মাথায় হাত বিজেপি নেতাদের। আগামি ৩০ অগাস্ট রাখি পূর্ণিমা । সেদিন দাদা আর ভাইদের হাতে রাখি পরিয়ে দিয়ে তাঁদের দীর্ঘায়ু ও জীবনে সাফল্য কামনা করবেন সব বোন ও দিদিরা।
বাঙালির ভাইফোঁটাকে ঘিরে যে ক্রেজ বাংলার মাটিতে বা বাঙালি পরিবারগুলিতে দেখতে পাওয়া যায় সেই একই ক্রেজ দেখতে পাওয়া যায় দেশজুড়ে হিন্দি, মারাঠী, পাঞ্জাবি, মাগধী, হরিয়ানভি, ভোজপুরী, গুজরাতি, সিন্ধি ভাষার মানুষদের মধ্যে রাখি পূর্ণিমাকে ঘিরে। এতদিন সেই রাখির বাজারে দাপট দেখাতো অবাঙালি ব্যাবসায়ীরা। মাঝে সেই বাজার দখল নিয়েছিল চিনে তৈরি হওয়া রাখি। কিন্তু এই দুই শিবিরকে হটিয়েই এবার রাতারাতি সেই বাজার দখল করে নিয়েছে বাংলার তৈরি ‘জয় বাংলা’ রাখি। দেশের নানা প্রান্তের বাজারে দেখা মিলছে সেই রাখির।
পরিবেশ বান্ধব, মসলিন কাপড় ও মসলিন সুতো দিয়ে তৈরি এই রাখি এখন হটকেকের মতো বিক্রি হচ্ছে দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের বাজারে। আর তাতেই মাথায় হাত পরেছে বিজেপি নেতাদের। ভোটের আগেই যদি মমতার রাখি এভাবে বাজার দখল করে নেয় তাহলে ভোটে কী হবে! আসলে একদিনে এই বাজার জয় হয়নি।
এর পিছনে কাজ করেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা। কার্যত তাঁর উদ্যোগেই বাংলার মাটিতে একাধিক রাখির ক্লাস্টার তৈরি করা হয়েছে। সারা বছর সেখানে রাখি তৈরি হয়। আর সেই কাজে যুক্ত মহিলাদের বাড়তি উপার্জনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে মমতার সরকার।
সারা বছর ধরে তৈরি হওয়া সেই রাখি ১ মাসের মধ্যে গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কম দামের, পরিবেশ বান্ধব, মসলিন কাপড় ও মসলিন সুতো দিয়ে তৈরি ‘জয় বাংলা’ রাখি এবার আবার খুবই পছন্দ হয়েছে রাখি ব্যবসায়ীদের। কার্যত তাঁরাই মাস ৬ আগে প্রায় ৫ কোটি রাখি তৈরির বরাত দেন বাংলার ওই সব রাখি তৈরির ক্লাস্টারগুলিতে। সেই সব রাখিই এখন দেশের বাজার দখল করে নিয়েছে নিঃশধে। আর সেই রাখির দাপটে এখন বাজারে কোনঠাসা দশা মোদি রাখি, পদ্ম রাখি, হিন্দু রাখি, সনাতন রাখির। ‘জয় বাংলা’ রাখির পাশাপাশি বাংলার তৈরি রাধাকৃষ্ণ রাখি ও দাদা-দিদি রাখিও বেশ পছন্দ হয়েছে দেশের মানুষের।