ফ্লোরিডা, ২৭ আগস্ট: আমেরিকার ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলের একটি দোকানে একজন শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী ৩ কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে। এরপর নিজের বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করে সে। এ ঘটনাকে প্রাথমিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বলছে নিরাপত্তা বাহিনী। ওই বন্দুকধারী ‘বর্ণবাদী’ ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, ২০ বছর বয়সী বন্দুকধারী একটি রাইফেল ও একটি পিস্তল নিয়ে ডলার জেনারেল স্টোরে প্রবেশ করে। এরপরই এলোপাথাড়ি গুলি চালানো শুরু করে সে। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে তার গোলাগুলি শুরু হয়। জ্যাকসনভিলের শেরিফের টিকে ওয়াটার্স বলেন, ‘হামলাকারী দু’জন পুরুষ ও একজন নারীকে গুলি করে হত্যা করেছে। বর্ণবিদ্বেষ থেকে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে। সে কৃষ্ণাঙ্গদের ঘৃণা করত।’ ওই হামলাকারীর বন্দুকে নাৎসি চিহ্নও দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কারণ তার কাছ থেকে বেশকিছু কাগজ উদ্ধার হয়েছে, যার ছত্রে ছত্রে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের প্রতি ঘৃণার কথা লেখা। মিডিয়া, পুলিশ এবং পরিবারের জন্যই আততায়ী ওই লেখাগুলি নিজের কাছে রেখেছিল বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ফ্লোরিডার মেয়র ডোনা ডিয়েগান এ ঘটনাকে ‘বর্ণবিদ্বেষ’ ও ‘ঘৃণ্য অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বন্দুকধারী যুবকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি নিরাপত্তা বাহিনী। হামলার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই। এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে গোটা ঘটনা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
আমেরিকায় বন্দুকবাজের হামলার ঘটনা নতুন নয়। গত মে মাসে টেক্সাসের একটি শপিংমলে ঢুকে মুড়িমুড়কির মতো গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল এক আততায়ীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশু এবং এক ভারতীয়ও ছিল। টেক্সাসের ডালাস শহরের একটি অভিজাত শপিংমলে ঘটে যাওয়া বন্দুকবাজের ওই হামলাকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা বলে উল্লেখ, করেছিল টেক্সাস পুলিশ। মার্কিন মুলুকে বন্দুকবাজের হামলা প্রতি বছরই হাজার হাজার প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। ২০২১ সালে, শপিংমল, হাসপাতাল, স্টেশন, বাস টার্মিনাস-সহ অনেক জনবহুল জায়গায় বন্দুকবাজের হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ৪৯ হাজার মানুষের। ২০২২ সালে ৪৫ হাজার মানুষ আমেরিকায় বন্দুকবাজের হামলায় মারা গিয়েছিল। ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত ৩০টির কাছাকাছি ছোট-বড় বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে গিয়েছে আমেরিকার নানান প্রান্তে।