পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে সিআইডির অতি সক্রিয়তা দেখে ক্ষুব্ধ হলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আগাম জামিনের আবেদন জানাতে আসা দু’জনকে কলকাতা হাইকোর্টের মধ্যে থেকেই গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির বিরুদ্ধে। সিআইডির এহেন অভিযানে বেজায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। স্পেশ্যাল অর্ডার জারির হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি। এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘আজ সকালে এই আদালতের নির্দেশে তাঁরা হলফনামা দেন। তারপরে যদি অন্য এজেন্সি তাঁদের তুলে নিয়ে যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। ‘সিআইডির এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান। বিচারপতি এদিন জানান, ‘কেন রুল ইস্যু করব না? এত দিন সিআইডি কি করছিল? আমি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আজই কথা বলব। না হলে এই প্রবনতা চলবেই। দরকারে স্পেশ্যাল অর্ডার তৈরি করব।’
আদালত সুত্রে প্রকাশ, কুণাল গুপ্তা ও নন্দিনী গুপ্তার বিরুদ্ধে ১১৭ কোটি টাকার সাইবার অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ওই মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। সম্প্রতি ইডির তরফেও ওই আর্থিক প্রতারণা মামলায় তাঁদের তলব করা হয়। তারপরই আগাম জামিনের অনুমতি চেয়ে এদিন আদালতে আবেদন জানান তাঁরা। শুক্রবার ওই মামলার শুনানি রয়েছে। অভিযোগ, এদিন কোর্ট চত্বর থেকেই তাঁদের গ্রেফতার করে সিআইডি। দুপুরে আদালত বসতেই বিচারপতির কাছে এই বিষয়ে নালিশ জানান কয়েকজন আইনজীবী। এরপরই রাজ্যের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানতে চান, ‘কার নির্দেশে সিআইডি এটা করল? রেজিস্ট্রার জেনারেলের অনুমতি নেওয়া হয়েছে? কোন সুপিরিওর নির্দেশ দিয়েছেন?’
এরপরই রাজ্যের আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, ‘এখনই ধৃতদের ও যে অফিসাররা ধরেছেন তাঁদের এজলাসে হাজির করুন। না হলে আমি যা নির্দেশ দেওয়ার দেব। কেউ ছাড় পাবে না।’ এরপরই ধৃত দু’জনকে নিয়ে বিচারপতির এজলাসে হাজির হন সিআইডির পাঁচ অফিসার। আদালতের কাছে তাঁরা দাবি করেন, ‘কোর্টের ভিতর থেকে না। হাইকোর্টের পশ্চিম গেটের সামনে থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’ আজ অর্থাৎ শুক্রবার এই বিষয়ে নির্দেশ দেবেন বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানাতে আসা দম্পতিকে গ্রেপ্তার করল সিআইডি। কেন গ্রেপ্তার করা হল তাঁদের? তা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। কার নির্দেশে এই কাজ করল সিআইডি, শুক্রবারের কৈফিয়ত তলব করলেন তিনি। আজ এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।