পারিজাত মোল্লা: ফের আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল চাকরি দেওয়ার জন্য। কিন্তু আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নিয়োগ মেলেনি বলে অভিযোগ। আর এই নিয়েই এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ৬২ জন প্রাথমিকের শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থী।
তাঁদের দাবি, ‘হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল দুই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেওয়ার জন্য’। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁদের চাকরি মেলেনি বলে অভিযোগ। আর এই নিয়েই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই ৬২ জন চাকরিপ্রার্থী। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন প্রাথমিকের ৭৪ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের দাবি, ‘এনসিটিই-র নির্দেশিকা অনুযায়ী স্নাতক স্তরে পর্যাপ্ত নম্বর রয়েছে’। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই ৭৪ জন চাকরিপ্রার্থী। এনসিটিই-র গাইডলাইন অনুযায়ী ৪৫ শতাংশ নম্বর দরকার স্নাতর স্তরে। ওই আবেদনকারীদেরও ৪৫ শতাংশ নম্বর ছিল।
অভিযোগ, পর্ষদ বলেছিল স্নাতক স্তরে ৫০ শতাংশ দরকার। এনসিটিই-র সেই গাইডলাইন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মানেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল। মামলাটি সেই সময় উঠেছিল বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর এজলাসেই। ওই মামলায় গত ১০ এপ্রিল বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য। বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর নির্দেশ রয়েছে, ‘জুন মাসের মধ্যে অর্থাত্ দুই মাসের মধ্যে ওই ৭৪ জনের নথি যাচাই করে চাকরি দিতে হবে’। কিন্তু সেই জুন পেরিয়ে জুলাইও শেষ হয়ে গেল। অথচ, ওই ৬২ জনের এখনও চাকরি মেলেনি বলে অভিযোগ মামলাকারীদের। এমন অবস্থায় তাই এবার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন ওই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা।
গত ২৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ‘তথ্য যাচাই করে মামলাকারী ৭৪ জনের মধ্যে ৬২ জনকে প্রাথমিকের শিক্ষক পদে চাকরির জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে শূন্যপদের তালিকাও চাওয়া হয়েছে’। তালিকা এলেই তাঁদের শীঘ্রই নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানায় পর্ষদ। এরই মধ্যে চাকরির দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা।