পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠে উলুবেড়িয়া বিডিওর শাস্তিদান বিষয়ক মামলার শুনানি। এদিন উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের বিডিওর আবেদন শুনলই না হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার ওপরই বিচারভার ছেড়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে পড়েন উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের বিডিও নীলাদ্রি দে।
এদিনকার শুনানি পর্বে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘আপনি অভিযোগকারিনীর কথা শোনেননি, আপনার কথা আদালত কেন শুনবে?’ প্রসঙ্গত, উলুবেড়িয়ার বহিরা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২ সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়নের নথি বিকৃতির করার অভিযোগ উঠেছিল। সিপিআইএম প্রার্থী কাশ্মীরা বেগম খান অভিযোগ করেন, তিনি মনোনয়ন পেশের সময় জমা দেওয়া নথির তালিকা সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, সেই নথি বিকৃতি করা হয়েছে। এমনকী জাতি শংসাপত্র জালিয়াতি করার অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনায় ডিভিশন বেঞ্চ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। সেই তদন্তের রিপোর্ট বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে জমা দিতে বলেছিল ডিভিশন বেঞ্চ।বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র কমিটি তদন্ত করে যে রিপোর্ট জমা দেয়, তাতে সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ সত্য বলে উল্লেখ করা হয়।
এমনকী বিডিও, এসডিও সহ ৩ জনকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করে কমিটি। যদিও এই ব্যাপারে এখনও বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ কোনও নির্দেশ দেয়নি। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে বিডিওর উদ্দেশে বলে, ‘সংবিধান আপনাকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিলেও অভিযোগকারীর অভিযোগ আপনি শোনেননি। তাহলে আপনার কথা আদালত কেন শুনবে বলে মনে করছেন?’ বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় এই মামলায় বিডিওর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘সংবিধান আপনাকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিল। আপনি সেটা পালন করতে ব্যর্থ। আপনি শপথ নিয়েছিলেন। সেটা রক্ষা করার কর্তব্য নয় কি আপনার?’বিডিওর আইনজীবী এদিনের শুনানিতে জানান, – ‘ তাঁর মক্কেল স্ক্রুটিনিতে অংশ নিয়েছিলেন। কমিশনের উপর তদন্তের নির্দেশ ছিল। কিন্তু বিডিও নীলাদ্রি দে-র কথা শোনা হয়নি। আপাতত তাঁর মক্কেলকে একটা নিরাপত্তা দেওয়া হোক। আজমল কাসভের ক্ষেত্রেও তার ফাঁসি দেওয়ার আগে তার বক্তব্য শুনেছিল আদালত’।
বিডিওর আইনজীবীর আবেদন, -‘নীলাদ্রি দে-র বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যেন তাঁর বক্তব্য শোনা হয়’।ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, -‘বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিডিও সম্পর্কে যে নির্দেশগুলি দিয়েছিলেন সেটা প্রাথমিক, তাই অবশ্যই বিডিওর বক্তব্য শোনার পরেই সিঙ্গল বেঞ্চ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’। এখনই ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।এখন দেখার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই মামলায় চুড়ান্ত নির্দেশে কি জানান?