পুবের কলম প্রতিবেদক: বিনিময়-পঠন পদ্ধতিতে গুরুত্ব দিতে হবে। উপাচার্যদের পরামর্শ দিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। এর মধ্যে রাজ্যপাল কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
সোমবার সল্টলেকের ‘মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আয়োজিত ওই বৈঠকে আরও একাধিক বিষয়ে ‘বার্তা’ দিয়েছেন আচার্য বোস।
রাজ্যপালের নিয়োগ করা ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী কালীন উপাচার্যেরা এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন।
একই সঙ্গে এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন। উপাচার্যদের রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বরদাস্ত করা হবে না দুর্নীতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিয়োগ করতে হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে। এদিন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এ দিন রাজ্যপাল উপাচার্যদের সামনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অস্বচ্ছতার কারণে জেলে রয়েছেন। এটা ‘খুবই খারাপ’ লাগছে।
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে হবে উপাচার্যদের। তবে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের অবসানের কথা বললেও সোমবার রাজ্যপালের কথায়
‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ এসেছে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘এটা বেদনাদায়ক যে রাজ্যের একজন মন্ত্রী জেলে গিয়েছিলেন। দুর্নীতি বন্ধ করতেই হবে।
বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা উপাচার্যদের সঙ্গে মুখোমুখি প্রোগ্রাম শুরু করছি। যে কোনও বিষয়ে স্কুল- কলেজ পড়ুয়ারা রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলা যাবে। শুধু একটা ফোন করলেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করা যাবে।’
সেই সঙ্গে রাজ্যপাল জানান, ‘বেস্ট অ্যান্ড ব্রাইটেস্ট অ্যামং দ্য স্টুডেন্টস’-রা রাজ্যপালের ‘ডায়মন্ড গ্রুপ’-এ যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
গত ২৯ জুন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নিয়োগ করা ১২ জন অন্তর্র্বতীকালীন উপচার্যের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাকে দেশের ‘এডুকেশন হাব’ করার লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল।
সোমবারও সে কথা বলেন তিনি। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘স্টুডেন্টস এক্সচেঞ্জ’ (পড়ুয়া বিনিময়) কর্মসূচির উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ হবে ‘ডু অ্যান্ড ডেয়ার’ স্লোগানে।’ পাশাপাশি, জানিয়েছেন, ‘অ্যাকাডেমিক-ইন্ডাস্ট্রি কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্তের কথাও।
গত জুন মাসে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই রাজ্যপাল বোস অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকার তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল।
কিন্তু সেই সংঘাতের আবহ যে তিনি জিইয়ে রাখতে চান না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে সোমবার বোস বলেন, ‘যা হয়ে গিয়েছে, তার জের টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সরকার এবং ‘স্টেক হোল্ডার’ (উপাচার্য-সহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) এক সঙ্গে কাজ করবে।’